ভূত থেকে বঙ্গ মা, থিমের সাজ রেলশহরে

আলোর উৎসবে আলোর রোশনাইয়ে রেলশহরকে সাজিয়ে তুলছে প্রস্তুতি সারা। কোথাও সাবেকিয়ানা তো কোথাও নিত্যনতুন থিম— কালীপুজোতেও রঙিন খড়্গপুর।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১৯
Share:

খড়্গপুরের একটি ক্লাবের মণ্ডপে প্রস্তুতি। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

আলোর উৎসবে আলোর রোশনাইয়ে রেলশহরকে সাজিয়ে তুলছে প্রস্তুতি সারা। কোথাও সাবেকিয়ানা তো কোথাও নিত্যনতুন থিম— কালীপুজোতেও রঙিন খড়্গপুর।

Advertisement

মিশ্র সংস্কৃতির শহর খড়্গপুরে বছর আটকে আগে থেকেই বিগ বাজেটের কালীপুজো শুরু হয়েছে। এ বার শহরের মালঞ্চ স্টার ইউনিটের পুজো মণ্ডপে থাকবে ঝিনুকের কারুকার্য। ৪০তম বর্ষের পুজোর বাজেট প্রায় ৯ লক্ষ টাকা। চন্দননগরের ধাঁচে আলো দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে মালঞ্চ রোড এলাকা। পুজো উপলক্ষে স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও রয়েছে। পুজোর পরে হবে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানও। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শিল্পী অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। থাকছে বাউল গানের আসরও। ক্লাবের কর্মকর্তা খোকন রাউত বলেন, “প্রতিবছর মণ্ডপ সজ্জায় অভিনব কিছু করার চেষ্টা করি। এ বার ঝিনুক দিয়ে মণ্ডপ সাজানো হবে। এ বার নানা কারণে বাজেট কমানো হয়েছে।”

শহরের ঝাপেটাপুর মোড়ে ‘টোয়েন্টি সেভেন্থ ইউথ সেন্টার’-এর পুজো এ বার ২১ বছরে পা দিল। ১৩ লক্ষ টাকার বাজেটের পুজোর থিম ‘বঙ্গ মা’। ব্যবহার হচ্ছে মাদুর, চাঁচ, পোড়ামাটি, মাটির প্রদীপ, সরা। প্রায় ১৫ ফুটের প্রতিমা হয়েছে দক্ষিণা কালীর ধাঁচে। হয়েছে বাহারি আলোকসজ্জাও। পুজো উপলক্ষে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। পুজো কমিটির প্রধান উপদেষ্টা প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “পুজোয় প্রতিবারই নানা সামাজিক ক্রিয়াকলাপের আয়োজন হয়। পুজোর পরে কলকাতার তারকা শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হবে।”

Advertisement

খড়্গপুর শহরের ইন্দা মোড়ের ‘ইউথ কর্নার অ্যান্ড সেভেন স্টার’-এর পুজোর থিম ‘ভুত আসছে-পার্ট ২’। পুরনো পরিত্যক্ত বাংলোর আদলে মণ্ডপ হচ্ছে প্লাই, চট, বাঁশ, প্যারিস, খড়, গাছের পাতা দিয়ে। মণ্ডপে ঝুলবে কঙ্কাল, ভূতের মডেল, মাথার খুলি। সেই সঙ্গে থাকছে জ্যান্ত ভূতও। ১৮ ফুট উচ্চতার মণ্ডপে থাকবে থার্মোকলের কারুকার্য। শ্মশানকালী মূর্তির পুজো হবে। থাকছে আলো-আধাঁরে দর্শনার্থীদের সামনে ভূতের নেমে আসার দৃশ্যও। পুজো কমিটির কর্মকর্তা সোমনাথ আচার্য বলেন, “বর্তমান সমাজে তান্ত্রিক-ওঝার মতো ভণ্ডদের ভিড়। এদের খপ্পরে পড়ে অনেকে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে এই থিম বেছে নেওয়া হয়েছে।”

আইআইটি সংলগ্ন তালবাগিচা এলাকাতেও কালীপুজোর জাঁক চোখে পড়ার মতো। এ বছর তালবাগিচা বাজার সংলগ্ন সেভেন স্টার ক্লাবের মণ্ডপে হোগলা পাতার কারুকার্য থাকবে। ৩১তম বর্ষের পুজোর বাজেট প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা। প্রতিমার বসন থেকে অলঙ্করণে ব্যবহার হয়েছে চা-পাতা ও বিস্কুট। নজর কাড়বে এলইডি আলো। ক্লাবের কর্মকর্তা পিঙ্কা দেবনাথ বলেন, “হাজার খানেক নতুন স্টিলের টিফিন কৌটো করে খিচুড়ি বিলি করা হবে।”

মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তালবাগিচার হাসপাতাল ময়দানের ন্যাশনাল ইউথ ক্লাবের পুজোয়। ৫২ বছরের পুজোর বাজেট ১২ লক্ষ টাকা। পুজো কমিটির সভাপতি প্রলয়শঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন, পুজোর বিসর্জনের পরে ২ নভেম্বর সঙ্গীতানুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন আরফিন রানা ও সতীশ গজমের। উপস্থিত থাকবেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকাও।

নজর কাড়বে নিউ ট্রাফিকের রোডস্টার ক্লাব, সুভাষপল্লির প্রতিষ্ঠিত কালীমন্দির, বিদ্যাসাগপুরের প্রতিষ্ঠিত কালীমন্দির, বড়বাতির প্রতিষ্ঠিত কালীমন্দির, খরিদা কুমোরপাড়া সারদাপল্লি সেবাসঙ্ঘের পুজোও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন