ভিড়ে চাঙ্গা বিজেপি চায় আরও বড় সভা

বুধবারের আগে বিজেপির এত বড় সভা কবে দেখেছে মেদিনীপুর? মনে করতে পারছেন না দলের প্রবীণ নেতারাও। শহরে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের সভার ভিড় দেখে স্বভাবতই উজ্জীবিত গেরুয়া-শিবির। নেতৃত্বও বেশ তৃপ্ত। এ বার মেদিনীপুরে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভা করাতে চেয়ে রাহুলবাবুর কাছে প্রস্তাবও রেখেছেন বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৩১
Share:

ভিড়ের মাঝে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। বুধবার মেদিনীপুরে।—নিজস্ব চিত্র।

বুধবারের আগে বিজেপির এত বড় সভা কবে দেখেছে মেদিনীপুর? মনে করতে পারছেন না দলের প্রবীণ নেতারাও। শহরে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের সভার ভিড় দেখে স্বভাবতই উজ্জীবিত গেরুয়া-শিবির। নেতৃত্বও বেশ তৃপ্ত। এ বার মেদিনীপুরে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভা করাতে চেয়ে রাহুলবাবুর কাছে প্রস্তাবও রেখেছেন বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তুষারবাবু বলেন, “আমরা চাই মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভা হোক। রাহুলদাকে এ কথা জানিয়েছি। উনি আশ্বাসও দিয়েছেন।”

Advertisement

জানা গিয়েছে, বুধবার জেলায় এসে তুষারবাবুর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ একান্তে কথা বলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। জেলায় দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি কী, জেলা সভাপতির কাছ থেকে তাই জেনে নেন রাহুলবাবু। এই সময়ই সদর শহরে দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সভা করাতে চেয়ে রাজ্য সভাপতির কাছে প্রস্তাব রাখেন তুষারবাবু। দলের এক সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে নিরাশ করেননি রাহুলবাবু। ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত রাজ্য সভাপতি আশ্বাস দিয়েছেন, মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভা করানোর সব রকম চেষ্টা তিনি করবেন।

বিজেপি-র দলীয় সূত্রে খবর, আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ করে এ বার জেলা সফর শুরু করতে চলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। বর্ধমান দিয়ে জেলা সফর শুরু হবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহরে সভা হতে পারে অমিত শাহের। লোকসভা ভোটের পর বুধবারই প্রথম মেদিনীপুর শহরে সভা করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। আগামী ৩০ ডিসেম্বর দুই মেদিনীপুরের কর্মীদের নিয়ে খড়্গপুর গ্রামীণের রূপনারায়ণপুরের কাছে সাংগঠনিক সভা করবেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে বিজেপি-র সভায় ঠাসা ভিড় স্বভাবতই দলের জেলা নেতৃত্বকে উজ্জীবিত করেছে। কারণ, সভাস্থল গাঁধীমূর্তির পাদদেশ থেকে এলআইসি মোড়, গোটা এলাকাই ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।

Advertisement

এ দিন তুষারবাবু বলেন, “তৃণমূল বিভিন্ন এলাকায় আমাদের কর্মী-সমর্থকদের আটকানোর চেষ্টা করেছে। দাঁতন, দাসপুর, কেশপুরে আমাদের বহু কর্মী-সমর্থককে আসতে দেওয়া হয়নি। না হলে সভার ভিড় আরও বেশি হত।” তৃণমূল অবশ্য অশান্তির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের দাবি, “জেলার সর্বত্র শান্তির পরিবেশ আছে। কেউ কেউ উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে মানুষ তা হতে দেবে না।” বিজেপির সভা নিয়েও তৃণমূল চিন্তিত নয় বলে দাবি করেছেন দীনেনবাবু। তাঁর কথায়, “বুধবার জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল করেন। এ বার দলের এসটি-এসটি সেলও বিভিন্ন ব্লকে মিছিল করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার কুৎসা ও অপপ্রচার এবং রাজ্যে শান্তি- শৃঙ্খলা- সম্প্রীতি- উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই এসটি- এসটি সেল পথে নামবে।” বিজেপির সভায় ভিড় ঠেকাতেই বুধবার তৃণমূল পথে নামার কৌশল নেয় বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। অবশ্য সেই কৌশল বিজেপির সভার উপর ততটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। তুষারবাবুর মতে, “বুধবারের সভার ভিড়ই প্রমাণ করে দিয়েছে, মানুষ পরিত্রাণ চাইছেন। সিপিএম বিধানসভায় আছে। কাগজে ওরাই বিরোধী। তবে মানুষ ধরে নিয়েছেন, এই মুহূর্তে প্রকৃত বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপি। জেলাতেও এখন বিজেপি এগোবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন