গ্রেফতার হওয়ার পর দুই দুষ্কৃতী। —নিজস্ব চিত্র।
শেষ রক্ষা হল না। লক্ষাধিক টাকা লুঠ করে মোটরবাইকে চেপে পালানোর সময় জনতার হাতে বমাল ধরা পড়ল দুষ্কৃতীরা। উদ্ধার হয়েছে লুঠ হওয়া টাকাও। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়ি মোড়ে ঘটনাটি ঘটে। ওই ঘটনার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই চার কিলোমিটার দূরে আশুই চকের কাছে দুষ্কৃতীদের ধরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ধৃত বছর ত্রিশের সাগল গাঙ্গুয়া ও বছর তেইশের সাগল রাজেশের বাড়ি ওড়িশার জাজপুরে। সম্পর্কে তাঁরা দাদা-ভাই। আজ, শুক্রবার ধৃতদের ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে তোলা হবে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন গোপীবল্লভপুরের এক ব্যবসায়ী ঝাড়গ্রামের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্ক থেকে চার লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা তুলে বাসে চেপে গোপীবল্লভপুরে ফেরেন। বাস থেকে নেমে গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়ি মোড়ের কাছে টাকার ব্যাগ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন ওই ব্যবসায়ী। আচমকা পিছন দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা নম্বরপ্লেটহীন একটি মোটরবাইকে করে দুই দুষ্কৃতী তাঁর টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে আশুইয়ের দিকে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গোপীবল্লভপুরে শোরগোল পড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ফোনে দুষ্কৃতীদের ও মোটরবাইকটির বিবরণ-সহ আশেপাশের গ্রামবাসীদের সতর্ক করে দেন। দুই দুষ্কৃতী মোটর-বাইক নিয়ে দ্রুত গতিতে আশুই গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা তাঁদের থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু দুষ্কৃতীরা বাইকের গতি বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এরপরই উল্টোদিক থেকে আসা মোটরবাইকে সওয়ার স্থানীয় এক যুবক দুষ্কৃতীদের মোটরবাইকটির সামনে নিজের মোটরবাইকটি ফেলে দেন। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরবাইক সমেত রাস্তায় ছিটকে পড়ে দুই ছিনতাইবাজ। বমাল তাদের পাকড়াও করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ততক্ষণে খবর পেয়ে আশুই চকে পৌঁছে যায় গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ। টাকার ব্যাগ-সমেত দুই দুষ্কৃতীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যদিও পুলিশের দাবি, ছিনতাইয়ের খবর পেয়ে দু’দিক থেকে পুলিশ দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। দুষ্কৃতীরা মাঝখানে পড়ে যায়। ফলে তাঁরা আর পালিয়ে যাবার সুযোগ পায়নি। এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “খবর পেয়েই পুলিশের মোবাইল ভ্যান সঙ্গে সঙ্গে দুষ্কৃতীদের ধরতে রওনা হয়ে যায়। ওই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে কোনও আন্তঃরাজ্য চক্রের যোগ রয়েছে কী না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”