বেহাল রাস্তা।—নিজস্ব চিত্র।
বেহাল মোরাম রাস্তা সংস্কারের দাবিতে রাস্তায় কাঠের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করল গ্রামবাসীরা। মঙ্গলবার সকালে তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কে পাঁশকুড়া ব্লকের রঘুনাথবাড়ি এলাকার পূর্ব ইটারা গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে রাস্তার খানাখন্দে গাছের গুঁড়ি, ডাল ফেলে স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করে। এ দিন সকাল ৬টা থেকে অবরোধ শুরু হয়। পরে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সন্দীপ করের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠে যায়।
তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কে পুরুষোত্তমপুর বাজার ও জোড়াপুকুর বাজার থেকে রঘুনাথবাড়ি হয়ে হরশঙ্করগামী ওই মোরাম রাস্তার অবস্থা বেহাল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রঘুনাথবাড়ি, খণ্ডখোলা, দেড়িয়াচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা দিয়ে যাওয়া প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ মোরাম রাস্তাটি স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতের অন্যতম ভরসা। রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের রঘুনাথবাড়ি, পূর্ব ইটারা, সুকুতিয়া গ্রামের কাছে এই রাস্তার প্রায় আড়াই কিলোমিটার অংশ খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। ফলে এই খন্দপথে চলাই দায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই রাস্তা মেরামতির জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে একাধিকবার দাবি জানানো সত্বেও কোনও কাজ হয়নি। দ্রুত রাস্তা মেরামতির দাবি জানাতেই রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ব্যস্ত সময়ে অবরোধের জেরে রাস্তায় যানজট তৈরি হয়। সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। অবরোধের জেরে রেশনের সামগ্রী বোঝাই একটি লরিও আটকে পড়ে। পরে সন্দীপ কর সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই লরিটি যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এ দিকে রাস্তা অবরোধের ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। সিপিএম পরিচালিত রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রতিমা দাসের অভিযোগ, “গাছের ডাল ফেলে রাস্তা অবরোধের ঘটনায় মূলত তৃণমূল সমর্থকরাই জড়িত।”
প্রতিমাদেবী বলেন, “ওই মোরাম রাস্তার বেহাল অবস্থার কথা জানি। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে রঘুনাথবাড়ি, পূর্ব ইটারা গ্রামে ওই রাস্তার অংশের মেরামতির জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরুর প্রক্রিয়াও চলছে। কিন্তু ওই কাজ শুরুর মুখেই রাস্তা অবরোধ করে গাড়ি চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “এই অবরোধের ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল সমর্থকরাই জড়িত। রাস্তায় গাড়ি চলাচলে বাধা না দেওয়ার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” পূর্ব ইটারা গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য তথা ওই পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সন্দীপ কর রাস্তা অবরোধে দলীয় সমর্থকদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, “বেহাল রাস্তা মেরামতির জন্য গ্রামবাসীরা গাছের ডাল ফেলে ভারী গাড়ি চলাচলে বাধা দিয়েছিল। অবরোধে দলীয় সমর্থকদের সাথে সিপিএম সমর্থকরাও ছিল। তবে এই অবরোধে রাজনীতির কোনও ব্যাপার নেই।” সন্দীপবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “আমি বিরোধী দলের সদস্য হওয়ায় সিপিএম পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত বিভিন্ন কাজে আমাদের বঞ্চিত করছে। এলাকার ওই বেহাল রাস্তা মেরামতির কাজ নিয়েও দীর্ঘদিন অবহেলা করা হয়েছে। তাই এলাকার বাসিন্দারা ক্ষুদ্ধ হয়ে রাস্তা অবরোধ করেছে।”