মারধরে জখম যুবকের মৃত্যু

চাহিদা মতো সিগারেট না পেয়ে দোকানদারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল স্কুল পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। ভাইপোকে মার খেতে দেখে তাঁকে বাঁচাতে ছুটে এসেছিলেন বিমল মাহাতো (৩৬)। বুধবার বিকেলে পড়ুয়াদের সেই মারধরের হাত থেকে রেহাই পাননি বিমলবাবুও। তাঁকে টেবিলের পায়া দিয়ে বেধড়ক মারা হয় বলে অভিযোগ। এর দু’দিনের মাথায় শুক্রবার এসএসকেএমে মৃত্যু হল প্রহৃত বিমলবাবুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪৭
Share:

বিমল মাহাতো। —নিজস্ব চিত্র

চাহিদা মতো সিগারেট না পেয়ে দোকানদারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল স্কুল পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। ভাইপোকে মার খেতে দেখে তাঁকে বাঁচাতে ছুটে এসেছিলেন বিমল মাহাতো (৩৬)। বুধবার বিকেলে পড়ুয়াদের সেই মারধরের হাত থেকে রেহাই পাননি বিমলবাবুও। তাঁকে টেবিলের পায়া দিয়ে বেধড়ক মারা হয় বলে অভিযোগ। এর দু’দিনের মাথায় শুক্রবার এসএসকেএমে মৃত্যু হল প্রহৃত বিমলবাবুর।

Advertisement

মারধরের ঘটনার পরই ভাইপো প্রদীপ মাহাতো অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু, অভিযোগ পুলিশ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিন যোগ্য ধারায় মামলা করায় দশ অভিযুক্তের ৯ জন ইতিমধ্যেই জামিনে ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। প্রদীপবাবুর আইনজীবী দেবনাথ চৌধুরী এ দিন ঝাড়গ্রাম প্রথম এসিজেএম আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, আহত বিমল মাহাতোর মৃত্যু হয়েছে। এই মামলায় অনিচ্ছাকৃত হত্যা ধারা-সহ অন্য ধারা যুক্ত করা প্রয়োজন। দেবনাথবাবু পরে বলেন, “পুলিশ প্রথম থেকেই মামলাটিকে লঘু করে দিয়েছে। পুলিশ বিমলবাবুর মৃত্যু সংবাদও আদালতকে জানায়নি।” এ ব্যপারে পুলিশের বক্তব্য জানতে ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, বিমলবাবুর মৃত্যুর খবর জানিয়ে সেই মতো নতুন ধারা যোগ করে আজ শনিবার আদালতে জানানো হবে।

বিমল মাহাতো ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়ায়াখানা কাছে খাবার দোকানের কর্মী ছিলেন। বাড়ি রাজডিহি গ্রামে। দোকান মালিক বিমলবাবুর ভাইপো প্রদীপ। স্থানীয় সূত্রের খবর, শহরের বাছুরডোবার বাসিন্দা কিছু স্কুল-পড়ুয়া তরুণ ও তাদের সঙ্গীরা নিয়মিত চিড়িয়াখানা এলাকায় এক বেআইনি চোলাই ভাটিতে যায়। প্রদীপবাবু বলেন, “বুধবার ছেলেগুলি এসে সিগারেট চায়। চাহিদা মতো ব্র্যান্ডের সিগারেট নেই বলায় ওরা গালিগালাজ করে। তখন স্থানীয় কয়েক জনের ধমক খেয়ে ছেলেগুলি চলে যায়।

Advertisement

ভাঙচুরের পর চায়ের দোকান

কিছু পরে কয়েক জনকে নিয়ে এসে দোকানে চড়াও হয়।” প্রদীপবাবুকে মারধর করার সময়ে ভাইপোকে বাঁচাতে গিয়ে হামলাকারীদের হাতে আক্রান্ত হন বিমলবাবুও। বিমলবাবুর মাথায় আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত বিমলবাবু রাস্তায় পড়ে যেতেই চম্পট দেয় হামলাকারীরা। পালিয়ে যাওয়ার সময় এক তরুণের ফেলে যাওয়া স্কুল ব্যাগের সূত্র ধরে দশ জন অভিযুক্তদের নাম পায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাদের নামে অভিযোগ করেন প্রদীপবাবু।

বিমলবাবুকে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মাথায় ১৫টি সেলাই দিয়ে কলকাতায় পাঠানো হয়। পুলিশ বৃহস্পতিবার তিন অভিযুক্তকে ধরে আদালতে তোলে। তারা জামিনও পায়। এ দিন আরও ৬ অভিযুক্ত ঝাড়গ্রাম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়ে যায়। অভিযোগ, বিমলবাবুর মৃত্যুর খবর আদালতকে পুলিশ না জানানোয় তারা জামিন পেয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন