যুদ্ধ শেষেও রেহাই নেই, দিনভর ব্যস্ত প্রার্থীরা

দু’মাস ধরে পথে-প্রচার চলেছে। দিনভর খাটুনি। তার উপর টেনশন। ভোট মিটতে প্রার্থীদের অনেকেই তাই ভেবেছিলেন, অন্তত একটা দিন একটু অন্য ভাবেই কাটাবেন। দেরিতে ঘুম থেকে উঠবেন। দেরি করে বেরোবেন। বেশিরভাগেরই কিন্তু তা আর হল না। ঘুম ভেঙে গেল সেই ভোর-ভোর। তারপর ব্যস্ততার দিনলিপি। মানস ভুঁইয়া, সন্তোষ রাণার মতো রাজনীতিক প্রার্থীরা ব্যস্ত থাকলেন দলের কাজে। আর তারকা প্রার্থী দেব ফিরলেন সিনেমার ব্যস্ত দুনিয়ায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৪ ০১:১৮
Share:

দু’মাস ধরে পথে-প্রচার চলেছে। দিনভর খাটুনি। তার উপর টেনশন। ভোট মিটতে প্রার্থীদের অনেকেই তাই ভেবেছিলেন, অন্তত একটা দিন একটু অন্য ভাবেই কাটাবেন। দেরিতে ঘুম থেকে উঠবেন। দেরি করে বেরোবেন। বেশিরভাগেরই কিন্তু তা আর হল না। ঘুম ভেঙে গেল সেই ভোর-ভোর। তারপর ব্যস্ততার দিনলিপি। মানস ভুঁইয়া, সন্তোষ রাণার মতো রাজনীতিক প্রার্থীরা ব্যস্ত থাকলেন দলের কাজে। আর তারকা প্রার্থী দেব ফিরলেন সিনেমার ব্যস্ত দুনিয়ায়।

Advertisement

সোমবার ভোট মিটেছে। তবু মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটেয় ঘুম ভেঙে যায় ঘাটালের বাম প্রার্থী সন্তোষবাবুর। তাঁর কথায়, “ভেবেছিলাম, একটু দেরি করে ঘুম থেকে উঠব। তা আর হল না! ঘুম ভেঙে গেল।” সাড়ে ছ’টা নাগাদ বেরিয়ে সিপিআইয়ের জেলা অফিসে যান দলের জেলা সভাপতি। সেখানেই খবরের কাগজগুলোয় চোখ বুলিয়ে নেন। তারপর ফোনে কথা বলেন দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে। ন’টা নাগাদ ঘাটাল রওনা দেন সন্তোষবাবু। এ দিন সেখানে ভোট পরবর্তী পর্যালোচনা বৈঠক ছিল। ইতিমধ্যে সন্তোষবাবু জেনেছিলেন, খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার রাধানগর-পপড়আড়ায় তৃণমূলের লোকজন দলের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। বাড়ি ভাঙচুর করেছে। তবে এ দিন সেখানে আর যাওয়া হয়নি বাম প্রার্থীর। আজ, বুধবার তিনি ওই সব এলাকায় যাবেন।

ঘাটালের কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়াও এদিন দিনভর দলের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ঘুম থেকে ওঠেন সকাল ছ’টা নাগাদ। চা-প্রাতরাশ সেরে বাড়ি থেকে বেরোন। তার মধ্যেই খবরের কাগজে চোখ বুলিয়ে নেন। কংগ্রেস প্রার্থী বলছিলেন, “ভোট মিটতেই তো একের পর এলাকায় গোলমাল শুরু করেছে তৃণমূলের লোকেরা। সোমবার সন্ধ্যা থেকেই খবর আসছিল। জখমদের হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করলাম।” মঙ্গলবার বিকেলে খড়্গপুরে গিয়ে মানসবাবু জখমদের সঙ্গে দেখা করেন। পরে মেদিনীপুরে গিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ফলে, ভোটের পরের দিনটা অন্য ভাবে কাটাতে পারেননি মানসবাবু।

Advertisement

ঘাটাল কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দীপক অধিকারী অর্থাৎ দেব ভোট মিটতেই এলাকা ছেড়েছেন। জানা গিয়েছে, ব্যস্ততার মধ্যেই ফিরেছেন তিনি। তবে রাজনীতি নয়, তাঁর সিনেমার দুনিয়ায়। দেব অবশ্য প্রচারের মধ্যেও শু্যটিং করেছেন। চন্দ্রকোনা রোড ও পুরুলিয়ায় ‘যোদ্ধা’ ছবির শু্যটিং সেরেছেন তিনি। ওই ছবিটির আগেই অবশ্য ‘বিন্দাস’ নামে একটি ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা। ফলে, ভোটের পরদিন থেকেই যে ছবির শু্যটিং শুরু করেছেন দেব। রাজনীতিতে এসে যে তাঁর নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা মানছেন দেব। তৃণমূলের তারকা প্রার্থীর কথায়, “এটা সত্যিই এক নতুন অভিজ্ঞতা। শেখার মতো। এখানে এসে বুঝেছি, কতটা পরিশ্রম আছে।” তিনি যে কাউকে প্রতিপক্ষের চোখে দেখেন না, তা-ও মনে করিয়ে দেন চ্যালেঞ্জ-এর নায়ক। তাঁর কথায়, “মেদিনীপুরে এসেই তো আমি সন্তোষ রাণার বাড়িতে চা খেয়ে এসেছি। ওখানেই তো গল্পটা শেষ হয়ে গেল!”

সোমবার ঘাটালে নির্বাচন মিটেছে। গত বুধবার মেদিনীপুরেও ভোট হয়ে গিয়েছে। তবে মেদিনীপুরের প্রার্থীদের ব্যস্ততাও এতটুকু কমেনি। বাম প্রার্থী প্রবোধ পণ্ডা বলছিলেন, “সেই সাড়ে পাঁচটা-ছ’টা নাগাদই ঘুম থেকে উঠছি। তারপর দলের জেলা অফিসে অনেকটা সময় কাটছে।” মেদিনীপুরের কংগ্রেস প্রার্থী চিকিৎসক বিমল রাজও ঘুম থেকে উঠছেন ভোর পাঁচটায়। তাঁর কথায়, “সকালে শরীরচর্চা করি। তারপর মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে হয়। আর চেম্বার তো আছেই।” সন্ধ্যায় দলের অফিসেও আসছেন কংগ্রেসের এই চিকিৎসক প্রার্থী।

অর্থাৎ ভোট মিটলেও প্রার্থীদের ব্যস্ততায় ছেদ পড়েনি। প্রত্যেকেই নিজের কাজে ডুব দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন