দাঁতনে বক্তব্য রাখছেন সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী।—নিজস্ব চিত্র।
কলেজের অনুষ্ঠানে এসে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী স্বীকার করে নিলেন, রাজ্যের কর্মসংস্থান ক্ষেত্র নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। রাতারাতি সকলকে চাকরি দেওয়া যাবে না।
মঙ্গলবার দাঁতন ভট্টর কলেজে নবীনবরণ উৎসব ছিল। এ দিন কলেজের নতুন একটি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও স্টেডিয়ামের উদ্বোধনও হয়। সেই অনুষ্ঠানেই তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “রাজ্যে কর্মসংস্থানের প্রশ্ন রয়েছে। দীর্ঘদিন কলেজ, স্কুল, পাবলিক সার্ভিস কমিশন-সহ বিভিন্ন সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ বন্ধ ছিল। কিছু আশাকর্মী, প্যারাটিচার, হেল্পার এই ছিল পশ্চিমবঙ্গের অতীত। বর্তমান সরকারকে এক কোটি বেকার নিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাতারাতি হয়তো সকলকে একসঙ্গে চাকরি দেওয়া যাবে না। তবে এখন সার্ভিস কমিশনগুলি সক্রিয় হয়েছে। সর্বত্র নিয়োগ হচ্ছে। পাশের বাড়ির যুবক-যুবতীরা চাকরি পাচ্ছে।”
এ দিন কলেজে ছিল উৎসবের মেজাজ। পাঁচ কিলোমিটার দূরে মনোহরপুরের নেকুড়সেনি বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হয়েছিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। সেখান থেকে বাইক মিছিল করে শুভেন্দুকে কলেজে নিয়ে আসা হয়। প্রথমে ইউজিসির বরাদ্দ করা ৩৫ লক্ষ ও কলেজ তহবিলের ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এক হাজার আসনের স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন সাংসদ। তারপর ইউজিসির দেওয়া এক কোটি টাকায় তৈরি বিদ্যাসাগরের নামাঙ্কিত ৫ হাজার বর্গফুটের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের উদ্বোধন করেন তিনি। জেলার শিক্ষা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “এটা ঠিক আমাদের জেলায় অভাব আছে, না পাওয়ার যন্ত্রণা রয়েছে। কিন্তু এই জেলার প্রতিটি বাড়িতে শিক্ষা রয়েছে।” বিগত কয়েক বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে দুই মেদিনীপুরের সাফল্যের কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি। পড়ুয়াদের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, “আমি চাই আপনাদের মধ্য থেকে আরও অমর্ত্য সেনের মতো অর্থনীতিবিদ, প্রনব মুখোপাধ্যায়ের মতো রাষ্ট্রনেতা অথবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মানবী জননেত্রী বেরিয়ে আসুক।”
রাজ্যের শিক্ষার উন্নয়নে ৪৫টি ডিগ্রি কলেজ, ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বলে এ দিন দাবি করেছেন তৃণমূল সাংসদ। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, জেলার জঙ্গলমহলে মাওবাদী কার্যকলাপ রোধে তিনি যথাসাধ্য উন্নয়নের চেষ্টা করেছেন। দাঁতন কলেজের স্টেডিয়ামের বাকি অংশের কাজের জন্য বিভিন্ন শিল্প সংস্থার কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি তহবিল থেকে ১০ লক্ষ টাকার সংস্থান ও গ্রন্থাগারের জন্য বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে এক লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা আশ্বাস দিয়েছেন শুভেন্দু। এ দিনের অনুষ্ঠানে শুভেন্দু ছাড়াও ছিলেন জেলার শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র, কলেজের সভাপতি বিক্রম প্রধান, অধ্যক্ষ পবিত্রকুমার মিশ্র, মোহনপুর ব্লকের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ পাত্র প্রমুখ।