এই রাস্তা তৈরি ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।
একশো দিনের কাজে মোরাম রাস্তা যথাযথ ভাবে তৈরি না-করে ফের ওই রাস্তাতেই মাটি ফেলে সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দের অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল পিংলা ব্লকের কুসুমদা পঞ্চায়েতের মুণ্ডমারি গ্রাম। অভিযোগ, ওই রাস্তায় দু’টি অর্থবর্ষে দু’রকমের কাজ দেখিয়ে কারচুপি করা হয়েছে। তদন্তের দাবিতে ইতিমধ্যেই বিডিও থেকে খড়্গপুরের মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ এসেছে।
গোটা ঘটনার তদন্ত দাবি করে ২৮ অগস্ট লিখিত ভাবে পিংলার বিডিও ও খড়্গপুরের মহকুমাশাসককে জানিয়েছেন কুসুমদা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই সদস্য জয়দেব গায়েন ও লক্ষ্মী হেমব্রম। শুক্রবার বিডিও অনিন্দিতা রায় চৌধুরী বলেন, “মোরাম রাস্তাটি চওড়া করতে দু’ধারে মাটি দিয়ে সংস্কার করা হচ্ছে বলে প্রধানের থেকে জেনেছি।” তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী মোরামের পরে মাটি দিয়ে রাস্তা সংস্কার করা যায় না। এক্ষেত্রে কী হয়েছে জানতে বিডিও-র কাছে দু’দিনের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা ও পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষে ওই এলাকার একটি মাটির রাস্তা সংস্কারের প্রকল্প তৈরি করেছিল স্থানীয় পঞ্চায়েত। ঠিক হয়, এলাকার তারিনী ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে চণ্ডী হেমব্রমের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মোরাম ফেলে সংস্কার করা হবে। খরচের পরিমাণ ধরা হয় ৯৮ হাজার ৩৭৭ টাকা। চলতি বছরের ১৩ জুন ওই রাস্তা সংস্কার হয়েছে বলে খাতায়-কলমে দেখানো হয়।
অভিযোগ, এ বছরে ফের ওই রাস্তায় তারিনী ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে বৈদ্যনাথ হেমব্রমের বাড়ি পর্যন্ত নতুন একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। চণ্ডী হেমব্রমের পাশের বাড়িটিই বৈদ্যনাথ হেমব্রমের। ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষের টাকায় ওই প্রকল্পে রাস্তায় মাটি দিয়ে সংস্কার চলছে। খরচের পরিমাণ ৬৮ হাজার ১৩৬ টাকা। একই রাস্তার দু’বার সংস্কারের ঘিরেই উঠেছে প্রশ্ন।
স্থানীয় কুসুমদা গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল প্রধান গীতা খাঁড়ার অবশ্য দাবি, “আগের মোরামের রাস্তাটি বৃষ্টির জলে ধুয়ে গিয়েছিল। তাই কিছু জায়গায় মাটি দিয়ে নতুন করে সংস্কার হচ্ছে।” টাকা নয়ছয় করতেই এমনটা করছে পঞ্চায়েত, অভিযোগ গ্রামবাসীর একাংশের। চণ্ডী হেমব্রম, বৈদ্যনাথ হেমব্রমদের অভিযোগ, “যেমন খুশি কাজ করছেন প্রধান। মোরাম রাস্তার সংস্কার না করেই পঞ্চায়েত বলছে রাস্তা সংস্কার হয়ে গিয়েছে। তারপর ফের একই রাস্তায় মাটি দিয়ে সংস্কার করা হচ্ছে।” রাস্তার কাজ করে শ্রমিকদের টাকা না-দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। তবে, টাকা না-পাওয়ার সমস্যা জেলাজুড়েই চলছে বলে মহকুমাশাসক জানান।