রকির খুনিদের শাস্তির দাবি এ বার ফেসবুকেও

পথে নেমে আন্দোলনের আঁচ পড়ল সোশ্যাল মিডিয়াতেও। ঝাড়গ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকিকে অপহরণ করে খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ফেসবুকে। ইমারতি সরঞ্জামের ব্যবসায়ী সৌরভের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে রোজই প্রায় পথে নামছেন ঝাড়গ্রামবাসী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০১:৪৯
Share:

প্রতিবাদ ফেসবুকে। —নিজস্ব চিত্র।

পথে নেমে আন্দোলনের আঁচ পড়ল সোশ্যাল মিডিয়াতেও। ঝাড়গ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকিকে অপহরণ করে খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ফেসবুকে।

Advertisement

ইমারতি সরঞ্জামের ব্যবসায়ী সৌরভের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে রোজই প্রায় পথে নামছেন ঝাড়গ্রামবাসী। কিন্তু যাঁরা সরাসরি পথে নামতে পারছেন না, কিংবা দূরে রয়েছেন, তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন। গত ১৩ মে ফেসবুক-এ সৌরভকে নিয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস ফর রকি’ নামে একটি গ্রুপ তৈরি করেন সৌরভের সম্পর্কিত দাদা জামশেদপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মণীশ অগ্রবাল। ওই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা এখন প্রায় আড়াই হাজারের কাছাকাছি। প্রতি মুহূর্তে সৌরভের সমর্থনে সদস্য সংখ্যা বাড়ছে হু-হু করে। ঝাড়গ্রামের পাশাপাশি, বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সৌরভের বন্ধুবান্ধব ও পরিজন এবং সৌরভের সঙ্গে যাঁদের কোনও রকম যোগাযোগ ছিল না, এমন অসংখ্য জনও ওই গ্রুপের সদস্য হয়েছেন।

প্রতিদিনই নানা অনুভূতিতে গ্রুপের ‘পেজ’ ভরে উঠছে। সৌরভকে নিয়ে প্রতিবাদী-কবিতা লিখে কেউ পোস্ট করছেন। সংবাদমাধ্যমে সৌরভ হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদ ও ছবি ‘শেয়ার’ করা হচ্ছে সেখানে। সৌরভকে নিয়ে তৈরি বিশেষ ওই গ্রুপে বিচার চেয়ে অজস্র মন্তব্যে ভরে উঠছে পাতা। সৌরভের অ্যালবামের নানা মুহূর্তের ছবিও রয়েছে। বুধবার টেলিফোনে বছর আঠাশের মণীশ বললেন, “ওই গ্রুপটি তৈরি করার সময় ভাবতেও পারি নি এমন সাড়া পাবো। আমরা যাঁরা দূরে রয়েছি, তাঁরা সব সময়ই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সৌরভের পরিবারের পাশে রয়েছি। সৌরভের জঘন্য হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দূষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমরা।”

Advertisement

কলকাতা থেকে সৌরভের এক বন্ধু লিখেছেন, ‘বন্ধু তোর চোখ ভরা গান, আমাকে মনে পড়ায়/ দোষীদের হাত ছিঁড়ে নেব আজ ভীষণ প্রতিজ্ঞায়!’ আর একটি কবিতায় লেখা হয়েছে: ‘সৌরভ তুই একবার বল, কষ্ট হয় নি তোর/ আমরা চিবুক শক্ত করে বুঝে নেব উত্তর!’ ঝাড়গ্রামের এক প্রাথমিক শিক্ষক লিখেছেন, ‘কঠিন শাস্তি চাই দাবি দিকে দিকে/ অপরাধের গুরুত্ব হয় না যেন ফিকে।’ পেশায় চিত্র-সাংবাদিক সুমন সিংহও সৌরভ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদ ও ছবি নিয়মিত পোস্ট করছেন। ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা সুমনবাবু বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে সৌরভের সঙ্গে আমার কোনও পরিচয় ছিল না। কিন্তু ওর মর্মান্তিক খুনের ঘটনাটি আমাকে ভীষণ ভাবে নাড়া দিয়েছে।”

গত ২৫ এপ্রিল ব্যবসায়িক কাজে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান বছর পঁচিশের সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকি। অরণ্যশহরের বলরামডিহির বাসিন্দা সৌরভের বাবা পবনকুমার অগ্রবালের ইমারতি সরঞ্জামের ব্যবসা রয়েছে। বাণিজ্যের স্নাতক সৌরভ বাবার ব্যবসার সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন। ঝাড়গ্রাম থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন সৌরভের বাবা পবনকুমার অগ্রবাল। অবশেষে বিশেষ সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে সৌরভ-অপহরণের মূলপাণ্ডা হলেন ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা পেশায় ঠিকাদার অশোক শর্মা। ৮ মে অশোক-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকি দুই অভিযুক্ত হলেন অশোকের ভাইপো সুমিত শর্মা ও অশোকের পরিচারক টোটন রানা। কিন্তু তার আগেই অবশ্য রকিকে খুন করা হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement