শিশুপুত্রকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে খুন, ধৃত মা

এক বছরের শিশুপুত্রকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত অনিমা দাসও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন বলে স্থানীয়দের দাবি। মর্মান্তিক ওই ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায়। মৃত শিশুপুত্র সুমন দাসের মা অনিমাদেবীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁর স্বামী তন্ময়কেও আটক করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডেবরা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৩
Share:

ঘটনার পরে দাসবাড়ির সামনে পড়শিদের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

এক বছরের শিশুপুত্রকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত অনিমা দাসও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন বলে স্থানীয়দের দাবি। মর্মান্তিক ওই ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায়। মৃত শিশুপুত্র সুমন দাসের মা অনিমাদেবীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁর স্বামী তন্ময়কেও আটক করেছে পুলিশ।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ছোট ছেলে সুমনের প্রতি স্বামীর উদাসীনতা এবং অভাবের জেরেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে অনিমাদেবী এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দাস দম্পতির ছ’বছরের এক ছেলে রয়েছে। সাংসারিক অনটনের জেরে সেই অয়ন মামার বাড়িতে থেকে পড়াশুনো করে। স্থানীয়দের অনেকেই জানাচ্ছেন, এই পরিস্থিতিতে ফের সন্তান হওয়ায় মনমরা থাকতেন অনিমাদেবী। তা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পেশায় কৃষিজীবী তন্ময়বাবুও। ঘটনার আকষ্মিকতায় ভেঙে পড়েছেন তিনিও। একটু সামলে নিয়ে এ দিন তিনি বলেন, “ছোট ছেলেটা হওয়ার পর থেকেই কেন জানি না ওর মনের জোর তলানিতে ঠেকেছে।”

স্থানীয় বাসিন্দা আশিস চৌধুরীর অবশ্য দাবি, শিশুপুত্রকে নিয়ে তন্ময়ও কম উদাসীন ছিলেন না। অনটনের সংসারে তাঁর বিরুদ্ধে মদ খেয়ে টাকা ওড়ানোর অভিযোগও এনেছেন অনেকেই। আশিসবাবু বলেন, “সুমনের খাবার জোগার নিয়েও ওদের মধ্যে অশান্তি হত বলে জানি।” তবে, দাম্পত্য সম্পর্কের টানাপড়েন হোক আর অনটন বা অন্য কোনও কারণ হোক মাঝে পড়ে শিশু সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। এ দিনের নৃশংস ঘটনায় শিউরে উঠছে ডেবরার ভবানীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নদী ঘেঁষা প্রত্যন্ত এলাকা ভবানীপুর।

Advertisement

এ দিন বাড়িতে একাই ছিলেন অনিমাদেবী। তাঁরা জানালেন, সকলের দিকে এক ফাঁকে তিনি ছোট ছেলেকে নিয়ে ছাদে যান। অভিযোগ, এরপরই বাড়িতে ব্যবহৃত বঁটি দিয়েই মাথা ও ঘাড়ের কাছে একের পর এক কোপ মেরে খুন করেন আপন সন্তানকে। ভাসুরপো তা দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে ছুটে আসেন পড়শিরা। স্থানীয়দের থেকে খবর পেয়ে আসে পুলিশ। পরে পড়শি অসিত দাসের অভিযগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। অসিতবাবু বলেন, “তন্ময়ের সঙ্গে অনিমার রাতে অশান্তি হয়। সকালে তন্ময় কাজে বেরিয়ে যেতে ভাইপো অরিন্দম ছাদে খুনের দৃশ্য দেখে চিৎকার করলে আমরা ছুটে যাই। পরে নিচে নেমে অনিমা নিজেও গলাতেও দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।” গোটা ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত বলেও স্থানীয়দের মত।

শিশুপুত্রকে মারার কারণ নিয়ে এ দিন সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুলতে চাননি অনিমাদেবী। পরে ডেবরা থানায় অনিমাকে জেরা করেন এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক জেরাতেও অনিমা বিশেষ কিছু বলতে চায়নি। আজ, বুধবার অনিমাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ তাঁকে নিজেদের হেফাজতে চাইবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন