হলদিয়ার সুতাহাটা ব্লকের চৈতন্যপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগকারী সড়কের অবস্থা বেহাল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার প্রশাসনের কাছে জানানো সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি।
পুরনো বিদ্যুতের লাইন সংস্কার হয়নি দীর্ঘ দিন। ফলে প্রায়ই তার ছিঁড়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। ব্লকে লিখিতভাবে অনেকবারই অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু ফল মেলেনি। খেজুরতলা থেকে কৃষ্ণনগর, নিমতলা থেকে মাধব মন্দির-সহ একাধিক বেহাল রাস্তা মেরামত করার দাবি জানিয়ে গ্রামবাসীরা পঞ্চায়েতে দরবার করলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। পুরনো বিদ্যুতের লাইন সংস্কার না হওয়ায় এলাকায় তার ছিরে দুর্ঘটনা বাড়ছে। জয়নগর পঞ্চায়েতের সচিব শেখ হাসেম আলি বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হন দিন কয়েক আগে। হাসেম আলির কথায়, “রাস্তা দিয়ে আসছিলাম। হঠাত্ বিদ্যুত্ এর লাইন ছিড়ে পড়েছিল। আমি দেখতে পাইনি। পিছন থেকে এক গ্রামবাসী দেখতে পেয়ে উদ্ধার করেন। না হলে যে কী হত।” তিনি জানান, এ বিষয়ে ব্লকে জানানো হয়েছে অনেকবার। কিন্তু কাজ হয়নি।
প্রসঙ্গত, সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতি সিপিএমের দখলে রয়েছে। ১৬টি আসনের মধ্যে ১১টি রয়েছে বামেদের দখলে। বাকি পাঁচটি তৃণমুলের দখলে। সুতাহাটা পঞ্ছায়েত সমিতির সদস্য শেখ সিরাজ আলি বলেন, “শুধুমাত্র বিদ্যুতের লাইন নয়, একাধিক সমস্যায় ব্লক উন্নয়ন আধিকারিককে আমরা চিঠি লিখেছি। সহযোগিতা পাইনি।” এমনকী তাঁর অভিযোগ, ইন্দিরা আবাসনের কোনও কাজ রূপায়িত হয় নি। গীতাঞ্জলি প্রকল্প, গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন, খাল সংস্কার, পাথরবেরিয়া কালভার্ট সংস্কার-সহ নানা দাবি নিয়ে ধারাবাহিক চিঠি লিখে, ধর্না দিয়েও কাজ হয়নি। পূর্ত দফতরের স্থায়ী সমিতির শেষ সভা হয়েছিল ১৭ জানুয়ারি। তারপর থেকে সভা হয়নি। সুতাহাটার প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য আনন্দময় অধিকারী বলেন, “আমরা ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক শুভেন্দু রায়ের কাছে বিক্ষোভ জানালেও কাজ হয়নি।”
সুতাহাটার ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক শুভেন্দু রায় বলেন, “আমি একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। কিছু ব্যাঙ্ক কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দিতে হয়রানি করছে খবর পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলছি।” পুজোর আগেই বেহাল রাস্তার মেরামতে উদ্যোগের কথাও তিনি জানান। গ্রামীণ বিদ্যুদয়নে পিছিয়ে থাকা প্রসঙ্গে বিডিও-র বক্তব্য, “ঠিকাদার ঠিকমত কাজ করছে না। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।” সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন এই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নুর আলম। তাঁর বক্তব্য, “রাস্তা যে খারাপ, তা অস্বীকার করছি না। কিষান ক্রেডিট কার্ডে একটি ব্যাঙ্ক অসহযোগিতা করছে, তাও ঠিক।”