সিপিএমের বিরুদ্ধে খাস জমিতে জবরদখলের অভিযোগ করলেন তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান। অভিযোগ, কেশিয়াড়ির কুসুমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কুসমা ও মশরা এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতির দু’টি পুকুরের ধারের সরকারি খাস জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে তৃণমূলের অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। সিরিএমের পাল্টা দাবি, নিজেদের কোন্দল চাপা দিয়ে অন্যদিকে দৃষ্টি ঘোরাতে তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমলে মশরার ২৫ একর ও কুসমার ১২ একর পুকুর ও তার পাশের জমি পঞ্চায়েত সমিতির। বছর খানেক আগে ওই দু’টি পুকুরের পাড়ে গাছ লাগিয়ে সংস্কারের কাজ করে পঞ্চায়েত সমিতি। তবে গত ১৫ দিনে ওই দু’টি পুকুরের ধারের জমিতে ঝুপড়ি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান সুব্রত দে ব্লক প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে সরকারি জমিতে ঝুপড়ি তৈরির বিষয়টি জানান। গত মঙ্গলবার বিষয়টির তদন্ত করে বিডিও-র কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে ব্লক ভূমি সংস্কার দফতর। বুধবার কেশিয়াড়ির বিডিও অসীমকুমার নিয়োগী বলেন, “আমার কাছে অভিযোগ এসেছিল। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। মহকুমাশাসককে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি অনুমতি দিলেই দখলদারদের সরিয়ে দেওয়া হবে।”
কেশিয়াড়ির ব্লক তৃণমূল সভাপতি জগদীশ দাস বলেন, “আমাদের ধারণা, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের হওয়ায় তাঁদের লোকেরা ওই এলাকা জবরদখল করেছে। যদিও ঠিক কারা ওই জমিতে জবরদখল করেছে সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে মুখ খুলতে চাননি ব্লক তৃণমূল সভাপতির ‘ঘনিষ্ঠ’ পঞ্চায়েত প্রধান সুব্রত দে। সুব্রতবাবু বলেন, “সরকারি জমি জবরদখল করা ঠিক নয়। তাই অভিযোগ করেছি। আমার দাবি, এর পিছনে যে দলই জড়িয়ে থাকুক তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের হলেও সেখানে জগদীশ দাস ও তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর জেলা নেতা বিষ্ণুপদ দে-র গোষ্ঠীর প্রভাবও রয়েছে। জগদীশ ঘনিষ্ঠ এক কর্মীর কথায়, “দেখে যা বুঝেছি যাঁরা জবরদখল করেছে, তাঁরা আগে সিপিএম করত। তবে এখন আমাদেরই একটা গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় রয়েছে।” বিষ্ণুপদ দেও বলেন, “কিছু সুবিধাবাদী সিপিএমের লোক আমাদের দলের ছত্রছায়ায় এসেছে ঠিকই।”
তা হলে কী এই জবরদখলের পিছনে সিপিএমের মদত রয়েছে? স্থানীয় সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য চাঁদমণি হাঁসদার জবাব, “এই এলাকায় আমি বাদে সবাই তৃণমূল। প্রধানের সঙ্গে তাল মিলিয়েই কাজ করি। তাই ওই জবরদখল নিয়ে আমিও সুব্রতবাবুকে সমর্থন করেছি।” তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর লোকেরা ওই জবরদখল করেছে।” একই ভাবে কেশিয়াড়ির সিপিএমের জোনাল সম্পাদক ভবানী গিরিও বলেন, “অভিযোগের মোড় ঘোরাতে ওঁরা মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।”