স্বজনহারাদের পাশে চন্দ্রকোনা, গড়বেতা

চন্দ্রকোনায় নিহতদের শোকার্ত পরিজনরা ৯ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে প্রায় দু’দিন। স্বজন হারিয়ে পরিবারগুলি তো বটেই, এখনও শোকস্তব্ধ গড়বেতা-চন্দ্রকোনা। বহু বাড়িতে রবিবারও চড়েনি হাঁড়ি! এলাকার সর্বত্রই আলোচনায় ফিরে ফিরে আসছে ভয়াবহ মৃত্যুর কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:০২
Share:

চন্দ্রকোনায় নিহতদের শোকার্ত পরিজনরা ৯ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে প্রায় দু’দিন। স্বজন হারিয়ে পরিবারগুলি তো বটেই, এখনও শোকস্তব্ধ গড়বেতা-চন্দ্রকোনা। বহু বাড়িতে রবিবারও চড়েনি হাঁড়ি! এলাকার সর্বত্রই আলোচনায় ফিরে ফিরে আসছে ভয়াবহ মৃত্যুর কথা।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ জানিয়েছেন, শনিবার রাতে দেহগুলি ট্রেনে তোলা হয়েছে। রবিবার রাত দু’টো নাগাদ ট্রেনটি খড়্গপুরে পৌঁছবে। তারপর রাতেই পুলিশের উদ্যোগে দেহগুলি বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা এ দিনও স্বজন হারানো পরিবারগুলির পাশে থাকার কথা বলেছেন।

গত শুক্রবার রাতে ভেলোরের শিনগার্দ শহরের এক চামড়ার কারখানার দেওয়াল ভেঙে বিষাক্ত জলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতার তিন যুবক এবং চন্দ্রকোনার ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ভোরে এই দু:সংবাদ গ্রামে পৌঁছতেই গ্রামের ছবিটাই পাল্টে গিয়েছে। অনেকের বাড়িতেই চড়েনি হাঁড়ি। ভরসা পড়শিরাই। তাঁরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে ওই পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়েছেন।

Advertisement

এ দিন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা গ্রামে যান। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এলাকায় যান জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায়, প্রদ্যোৎ ঘোষ, শঙ্কর দোলই, ছায়া দোলই, দুর্গাশঙ্কর পান, কল্যাণ তেওয়ারিরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গড়বেতার বলরামপুর এবং চন্দ্রকোনার চালতাবাঁদি গ্রামের জনা পঞ্চাশেক যুবক শিনগার্দ শহরের একাধিক চামড়ার কারখানায় কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে কেউ এখন বাড়িতে রয়েছেন, কেউ ওই শহরেই কাজ করছেন। শুক্রবারের দুর্ঘটনার পর তাঁদের অনেকেই সংশয়ে। কেমন? স্থানীয়দের মত, যাঁরা বাইরে আছেন তাঁদের অনেকেই এলাকায় ফিরতে চাইছেন, আর যাঁরা এলাকায় রয়েছেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই আর কাজে ফিরতে চাইছেন না!

গড়বেতার বলরামপুরের নাসির আলি মল্লিক, চালতাবাঁদির রিয়াজুল মল্লিকেরা বলেন, “ওই সব কারখানায় কাজ করে বহু বাড়িতে হাল ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু এমন ঘটনার পর তাঁদের বাড়ির অভিভাবকেরা এতটাই আতঙ্কে রয়েছেন যে ঘরের ছেলে ঘরেই থাকুক, এটাই চাইছেন।” এমন আতঙ্ক যে অস্বাভাবিক নয়, তা মানছেন চালতাবাঁদির শেখ নজরুল, বলরামপুরের রফিকুল খানের মতো অনেকেই। একই সঙ্গে তাঁরা বলছেন, “আমরা সকলেই ওই পরিবারগুলির মনোভাব বুঝি। তাঁদের পাশেও আছি। তবে এ-ও বোঝানোর চেষ্টা করছি, বাড়িতে বসে থেকে কাজে না গেলে ক’দিন বাদে খাবে কী?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন