সমন্বয় বাড়াতে পঞ্চায়েতকে এ বার মোবাইল

উন্নয়নমুখী প্রকল্প রূপায়ণে সমন্বয় আরও বাড়াতে এবার গ্রাম পঞ্চায়েতে জিআইএস মনিটরিং সিস্টেম চালু করতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। শুরুতেই অবশ্য জেলার ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে না। প্রথমে ‘গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাতিষ্ঠানিক স্বশক্তিকরণ কর্মসূচি’-র আওতাধীন ১৭২টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে এই পদ্ধতির মধ্যে যুক্ত করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০০:২৫
Share:

পঞ্চায়েত সদস্যদের মোবাইল প্রদান।—নিজস্ব চিত্র।

উন্নয়নমুখী প্রকল্প রূপায়ণে সমন্বয় আরও বাড়াতে এবার গ্রাম পঞ্চায়েতে জিআইএস মনিটরিং সিস্টেম চালু করতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। শুরুতেই অবশ্য জেলার ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে না। প্রথমে ‘গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাতিষ্ঠানিক স্বশক্তিকরণ কর্মসূচি’-র আওতাধীন ১৭২টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে এই পদ্ধতির মধ্যে যুক্ত করা হচ্ছে। সেই লক্ষে বুধবার জেলা পরিষদ হলে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় পঞ্চায়েত প্রধান, সচিব ও নির্মাণ সহায়কদের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্লকের আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। এদিনই কর্মশালায় জিআইএস প্রযুক্তি সম্পর্কে বোঝানোর পাশাপাশি প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে মোবাইল দেওয়া হয়। এই মোবাইলের মাধ্যমে গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পের ছবি-সহ যাবতীয় নথি সঞ্চয় করে রাখা যাবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারও ওই মোবাইলেই ‘লোড’ করা রয়েছে।

Advertisement

একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কী কী সম্পদ রয়েছে এর ফলে তা যেমন জানা যাবে, তেমনি আবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রেও সুবিধে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোথাও পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকা সত্বেও সেখানে আবার একটি পানীয় জল প্রকল্প মঞ্জুর হয়ে গিয়েছে। এতে যেমন সময় নষ্ট হয়, তেমনি অর্থেরও অপচয় হয়। কিন্তু ‘জিআইএস সিস্টেম’-এর মাধ্যমে অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ ধরে একটি প্রকল্পের বিশদ তথ্য জানা যাবে। ওয়েবসাইটে তা নিয়মিত ‘আপডেট’ করলে তার সেই সময়কার অবস্থা কী তাও ছবি-সহ বোঝা যাবে। ফলে কোনও একটি প্রকল্প দেখার জন্য কলকাতা বা দিল্লিতে বসেও প্রশাসনিক কর্তারা প্রকল্পের হালহকিকত জানতে পারবেন। জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক শম্পা হাজরা বলেন, “পঞ্চায়েতের সমস্ত প্রকল্পগুলি যাতে আরও সুষ্ঠ ও সুন্দর করে তুলে ধরা যায় সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।”

একটি গ্রাম পঞ্চায়েত নির্দিষ্ট সময়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে পারলে, কোনও দুর্নীতি না থাকলে, সময়ে অর্থ খরচের হিসাব দেওয়া-সহ কয়েকটি বিষয়ে সাফল্য দেখালে বিশ্বব্যাঙ্ক সশক্তিকরণ যোজনার আওতায় আসা যায়। আর এই যোজনায় আসেলে প্রতি বছর অর্থও মেলে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৭২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এই প্রকল্পের আওতায় এলেও অর্থ সাহায্য পেয়েছে ১৬২টি গ্রাম পঞ্চায়েত। কারণ, বাকি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি শর্তের নিরিখে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১০-১১ অর্থবর্ষ থেকে এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল। প্রথমের দিকে অবশ্য কোনও বছর ৯০টি, তো কোনও বছর ১২০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এই অর্থ সাহায্য পেয়েছিল। যাতে এই প্রকল্পের আওতাধীন প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতই অর্থ পায় সে জন্য একাধিকবার বৈঠক করে প্রশাসন। তাতে চলতি অর্থবর্ষে ১৬২টি গ্রাম পঞ্চায়েত টাকা পেলেও সব গ্রাম পঞ্চায়েত অবশ্য টাকা পায়নি। এবার ১৬২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য প্রায় ৪৫ কোটি মিলেছে।

Advertisement

প্রশাসনের আশা, পাঁচ বছরের জন্য এই প্রকল্প চালু করা হলেও বিশ্বব্যাঙ্ক ভবিষ্যতেও এই প্রকল্পে অর্থ দেবে। তাই জেলার সব গ্রাম পঞ্চায়েতই যাতে এই প্রকল্পে অর্থ পায় সে জন্য এখন থেকেই তৎপরতা শুরু হয়েছে। সেই লক্ষ্যেই জিআইএস সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, সরকারি বিভিন্ন দফতর তো অর্থ দেবেই। কিন্তু একটি পঞ্চায়েত বছরে অন্য খাত থেকে ৪০-৫০ লক্ষ টাকা পায় তাহলে তা দিয়ে তো অনেক সম্পদ তৈরি সম্ভব। এই অতিরিক্ত অর্থ পেতেই পঞ্চায়েতগুলিকে আরও সক্রিয় করার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও প্রশাসন জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন