—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
জেলার জুয়েল রানাকে সম্প্রতি ওড়িশায় বাংলাদেশি সন্দেহে পিটিয়ে খুনের পরে, সে রাজ্যে থেকে বাড়ি ফিরছেন মুর্শিদাবাদের অনেক পরিযায়ী শ্রমিকই। সোমবার তেমনই জনা পাঁচেক ফিরেছেন সুতি লাগোয়া রঘুনাথগঞ্জের একাধিক গ্রামে। সকলেরই এক কথা, ‘‘যেতে চাই না ভিন্ রাজ্যে। এখানে কাজের ব্যবস্থা করে দিন।’’ এরই মধ্যেওড়িশার বালেশ্বরে মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিককে লাথি, ঘুঁষি মারার ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে। পরিযায়ীদের উপরে হামলার প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার ভগবানগোলায় পরিযায়ী শ্রমিকেরা প্রতিবাদে মিছিলের ডাক দিয়েছেন।
সরকারি হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভিন্ রাজ্যে পরিয়ায়ী হিসেবে কর্মরত এবং নথিভুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা এখন প্রায় ২৩ লক্ষ। বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপরে নির্যাতন শুরু হওয়ার পরে তাঁদের ফিরে আসার আহ্বানজানিয়ে ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্প শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের আওতায় শ্রমিকেরা আবেদন জানালে সরকারি স্তরে খোঁজ-খবর হয়, পুলিশি অনুসন্ধান হয়। ঝাড়াই-বাছাই করে তার পরে আবেদনেসরকারি ‘সম্মতি’ মেলে। সরকারি সূত্রের খবর, এই প্রক্রিয়া পেরিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত যত পরিযায়ী শ্রমিক সরকারি সহায়তার জন্য অনুমোদন পেয়েছেন, সেই সংখ্যা পাঁচ হাজার পেরোয়নি। এর মধ্যে বড় অংশই পাঁচ হাজার টাকা সরকারি অনুদান বা ফিরে আসার পথ-খরচ (সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকাই) চেয়েছেন। রাজ্যে পুনর্বাসন বা বিকল্প কর্মসংস্থানের আবেদনকারী খুবই কম।
সারা গায়ে ছেঁকার দাগ নিয়ে ওড়িশা থেকে মুর্শিদাবাদে ফিরেছেন রসিদ শেখ। তিনি বলেন, ‘‘উনুন ধরানোর কাঠ দিয়ে মেরেছে। বলেছে, ‘মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ তৈরি করছিস? তোরা বাংলাদেশি’।” তাঁরও দাবি, ‘‘ওড়িশা আর যাব না। এখানে কাজের ব্যবস্থা করা হোক।’’
পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের সভাপতি সামিরুল ইসলাম বলেন, “রাজ্যে প্রায় ৩০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক আছেন। তাঁদের জন্য কিছু সুবিধা চালু হয়েছে। দু’কোটি এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মতো খরচহয়েছে তাঁদের জন্য গত দু’বছরে। রাজ্যে ৭৬ জন পরিযায়ীর দেহ সরকারি ব্যবস্থায়বাড়ি ফেরানো হয়েছে। জুয়েল রানা তাঁদের অন্যতম।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘এ রাজ্যে ভিন্-রাজ্যের দেড় কোটি মানুষ কাজ করেন। রাজ্যে কাজ নেই,এটা ঠিক নয়।”
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে