দায়িত্বে: সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়াই এখন চলছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ। মধ্যমগ্রামের চৌমাথায়। রবিবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ।
উত্তর ২৪ পরগনার নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন ২৯ জানুয়ারি। নির্বাচন কমিশনের বিধি মেনে চলতে হচ্ছে। সেই জন্য ওই জেলার মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় সিভিক ভলান্টিয়ারের মারের জেরে মৃত স্কুটিচালকের পরিবারকে আপাতত কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া যাচ্ছে না বলে রবিবার জানান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে খাদ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, তাঁরা ওই পরিবারের পাশেই আছেন। ভোটপর্ব মিটলে এই বিষয়ে ‘যথোচিত ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে।
ওই স্কুটিচালকের ম়ৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে তিন দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। স্কুটিচালক সৌমেন দেবনাথ কেন হেলমেট পরেননি, তা-ই নিয়ে প্রথমে বচসা হয় ওই সিভিক পুলিশকর্মীর। তার পরে শুরু হয় মারধর। মারের জেরে শনিবার দুপুরে মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় মৃত্যু হয় ওই এলাকারই বাসিন্দা স্কুটিচালক সৌমেনের। মারধর ও খুনের অভিযোগে ধরা হয়েছে সৌমেন রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে। ঘটনার প্রতিবাদে সিভিক পুলিশের উপরে দফায় দফায় মধ্যমগ্রাম থানা ঘেরাও এবং মধ্যমগ্রাম চৌমাথা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।
তদন্তের স্বার্থেই রবিবার, ঘটনার পরের দিন বারাসত আদালতে সিভিক ভলান্টিয়ার সৌমেনকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানায় মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং ভিডিও রেকর্ডিং খতিয়ে দেখে ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে। সেই অনুসারে তদন্ত এগোবে।’’
মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় যখন সিভিক ভলান্টিয়ার সৌমেনের সঙ্গে স্কুটিচালক সৌমেনের বচসা শুরু হয়, সেই সময় থেকে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত পুরো ঘটনার সিসি ক্যামেরা-ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। সুরতহাল (মৃতদেহে কী কী আঘাতের চিহ্ন আছে, কী ভাবে রয়েছে) এবং ময়না-তদন্তের পুরো প্রক্রিয়াই ক্যামেরায় তুলে রাখা হয়েছে। সেই সব তথ্যপ্রমাণ সামনে রেখেই খুনের অভিযোগে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সৌমেনকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানান তদন্তকারীরা।
এ দিন সকালে মৃতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে যান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবু, এলাকার বিধায়ক রথীন ঘোষ-সহ শাসক দলের নেতারা। খাদ্যমন্ত্রী জানান, নির্বাচন কমিশনের বিধিতে আটকাবে বলেই শোকাহত পরিবারকে আপাতত কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া যাচ্ছে না। বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী আর দুই মেয়েকে নিয়ে সৌমেনের পরিবার। সংসারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন তিনিই।
সৌমেনের স্ত্রী কাকলিদেবী বলেন, ‘‘নির্বিবাদ মানুষ বলে ওঁকে সকলেই ভালবাসতেন। তাঁদের অনেকেই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’’