প্রতীকী ছবি।
স্কুলশিক্ষায় নানা ভাবে অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। তাতে পঠনপাঠনের কতটা উন্নতি হচ্ছে? তার একটা ধারণা পেতে একই দিনে একই প্রশ্নপত্রে গোটা দেশে পড়ুয়াদের লিখিত পরীক্ষা নিচ্ছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। আজ, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সর্বত্র এই সমীক্ষা-পরীক্ষা হবে। যার পোশাকি নাম ‘ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট সার্ভে’।
শিক্ষা সূত্রের খবর, রাজ্যে এই পরীক্ষার দায়িত্বে রয়েছে ডিস্ট্রিক্ট ইনস্টটিউট অব এডুকেশনাল অ্যান্ড ট্রেনিং (ডায়েট) এবং স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এসসিইআরটি)। পুরো ব্যবস্থাটি দেখভাল করবে সর্বশিক্ষা মিশন। প্রতিটি পুর এলাকায় পর্যবেক্ষক হিসেবে এক জন করে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং ব্লক এলাকায় ব্লক উন্নয়ন আধিকারিককে নিয়োগ করেছে রাজ্য প্রশাসন। এ রাজ্যে ২৩টি জেলায় ১৭৩টি স্কুলের মোট ৮০ হাজার পড়ুয়া এই পরীক্ষা দেবে।
এসসিইআরটি-র খবর, প্রতিটি জেলায় বাছাই করা স্কুলের তৃতীয়, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির ৩০ জন পড়ুয়ার উপরে এই সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। প্রতিটি প্রশ্ন হবে মাল্টিপল চয়েস টাইপের। তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির জন্য থাকবে প্রথম ভাষা, গণিত এবং পরিবেশবিদ্যার প্রশ্ন। পরীক্ষার সময় দেড় ঘণ্টা। অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের জন্য থাকবে প্রথম ভাষা, গণিত, বিজ্ঞান এবং সমাজবিজ্ঞান। এ ক্ষেত্রে সময় দু’ঘণ্টা।
এসসিইআরটি-র এক কর্তা জানান, এর আগেও এই ধরনের সমীক্ষা হয়েছে। কিন্তু সেটা সব রাজ্যের প্রতিটি জেলা নিজেদের মতো করে করেছে। এ বারেই প্রথম একসঙ্গে সব রাজ্যে একই সময়ে একই প্রশ্নপত্রে এই পরীক্ষা হচ্ছে। ‘‘এটি আসলে কোনও পরীক্ষা নয়, এটা এক প্রকার সমীক্ষাই। এর ফলে বোঝা যাবে, কোন রাজ্যের কোন জেলায় মেধা কী রকম,’’ বলেন ওই প্রতিষ্ঠানের এক কর্তা। ফলাফল স্কুলভিত্তিক না-হয়ে জেলা-ভিত্তিক হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্য ও জেলা-ভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি করবে ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরে শিক্ষা ক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে মন্ত্রক। শিক্ষা যুগ্ম তালিকাভুক্ত। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে শিক্ষার উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করবে বলে জানান ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তারা।
কয়েক মাস আগে কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে এসে এই পরীক্ষার বিষয়ে আগাম ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। তিনি জানান, এক প্রশ্ন করার মাপকাঠি এক ও স্থির রাখা। এর ফলে রাজ্য ও জেলা-ভিত্তিক সমীক্ষা করতে সুবিধা হবে। এক শিক্ষক জানান, সিবিএসই, সিআইএসসিই-র সঙ্গে অনেকেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মানের তুলনা করেন। কোন রাজ্যের পড়ুয়াদের কেমন মেধা, এই পরীক্ষা থেকে তার ধারণা পাওয়া যাবে।
তবে এই উদ্যোগের মধ্যে কিছু ফাঁকফোকর রয়েছে বলে শিক্ষকদের একাংশের অভিমত। কারণ জেলার প্রথম সারির স্কুলের প্রথম সারির পড়ুয়াদেরই বেছে নেওয়া হয়। তাই এ ভাবে সারা রাজ্যের তথা গোটা দেশের মেধা সমীক্ষা সম্পূর্ণ হতে পারে না বলে মনে করেন তাঁরা।