Attack on TMC MLA

হত্যা করতেই হামলা হয়েছে! আতঙ্কিত বিধায়ক সাবিত্রী তৃণমূলের সভাপতি বক্সীর মোবাইলে পাঠালেন বার্তা

মানিকচকের বিধায়কের অভিযোগ, কিছু ক্ষণ পর সন্দেহজনক গাড়িটি ফের ঘুরে এসে পিছন থেকে তাঁর গাড়িকে ধাওয়া করতে শুরু করে। এই ঘটনায় ভয় পেয়ে যান বিধায়ক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০১:৫২
Share:

(বাঁ দিকে) সাবিত্রী মিত্র এবং সুব্রত বক্সী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

হত‍্যার উদ্দেশ‍্যেই হামলা হয়েছে তাঁর উপর। এই অভিযোগ জানিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে শনিবার রাতেই মোবাইল-বার্তা পাঠালেন মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ মালদহের ইংরেজবাজার থানা এলাকার ধরমপুরের কাছে রাজ্য সড়কের উপর উল্টো দিক থেকে আসা একটি গাড়ি সাবিত্রীর গাড়িতে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। বিধায়ক গাড়িচালকের তৎপরতায় কোনও মতে রক্ষা পান। মানিকচকের বিধায়কের অভিযোগ, কিছু ক্ষণ পর সন্দেহজনক গাড়িটি ফের ঘুরে এসে পিছন থেকে তাঁর গাড়িকে ধাওয়া করতে শুরু করে। এই ঘটনায় ভয় পেয়ে যান বিধায়ক। শেষমেশ একটি জনবহুল এলাকায় নিজের গাড়িটি দাঁড় করিয়ে মানিকচক থানা এবং মিলকি পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন তিনি। ইংরেজবাজার থানা এলাকার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করে। তার পরেই তিনি দলের রাজ্য সভাপতির মোবাইলে হামলার কথা জানিয়ে বার্তা পাঠান।

Advertisement

সাবিত্রী বলেন, “বক্সীদা আমাদের অভিভাবক। তাই হামলার পরেই আমি সবার আগে তাঁকে ফোনে বার্তা পাঠিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয়েছে, জেলার শীর্ষ নেতাদের আগে রাজ্য তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বে যিনি আছেন তাঁকে বিষয়টি জানানো উচিত। তাই বক্সীদাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। হত‍্যার উদ্দেশ‍্যেই এই হামলা, তা জানিয়েছি ওঁকে।”

মালদহ জেলার রাজনীতিতে প্রবীণ নেত্রী সাবিত্রী। প্রয়াত কংগ্রেস নেতা বরকত গনিখান চৌধুরীর হাত ধরে রাজনীতিতে এসে যাঁরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তাঁদের অন্যতম তিনি। ২০১১ সালে তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন। তিনি রাজ্যের মন্ত্রীও ছিলেন। ২০১৬ সালে পরাজিত হন তিনি। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আবার মানিকচক থেকে বিধায়ক হিসেবে জয় পান। জেলার রাজনীতিতে তাঁর সঙ্গে দলের বিভিন্ন নেতার বিবাদ রয়েছে বলে শোনা যায়। তবে হামলার ঘটনার সেই রাজনৈতিক বিবাদের কথা মানতে চাননি সাবিত্রী।

Advertisement

প্রসঙ্গত, মালদহ জেলায় সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমূল নেতাদের উপর একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। জানুয়ারিতে দু’টি পৃথক হামলায় দুই তৃণমূল নেতা নিহত হয়েছেন। প্রথম ঘটনা, ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়া এলাকায় তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকারকে দুষ্কৃতীরা গুলি করে হত্যা করে। তদন্তে নেমে পুলিশ তৃণমূলের মালদহ শহর সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে গ্রেফতার করে। তাঁকে পরে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়। দ্বিতীয় ঘটনা, কালিয়াচকের নয়া বস্তি এলাকায় নিকাশি ও রাস্তা উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সময় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ ও কর্মী এসারুদ্দিন শেখের উপর হামলা হয়। এই হামলায় হাসান শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী নিহত হন। বকুল শেখ ও এসারুদ্দিন শেখ গুরুতর আহত হন। স্থানীয়দের একাংশের মতে, এই হামলার পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল। তাই তাঁর উপরে হামলার ঘটনার পর আগেভাগে সাবিত্রী দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারস্থ হয়েছেন বলেই মনে করছে মালদহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তাঁর উপর হামলার ঘটনার পর তিনি বিষয়টি জেলা সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সী এবং প্রবীণ নেতা তথা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে না জানিয়ে সরাসরি রাজ্য সভাপতিকে জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement