এসএস অহলুওয়ালিয়া।—ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানে ঢুকে বোমা ফেলে এসেছে বায়ুসেনা। গুঁড়িয়ে দিয়ে এসেছে অসংখ্য জঙ্গিঘাঁটি। কিন্তু তাতে ঠিক কতজন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে? এখনও পর্যন্ত তার সদুত্তর মেলেনি। তবে ৩০০-৩৫০ জঙ্গি মৃত্যুর যে সংখ্যা উঠে আসছে, সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ঘাড়েই তার দায় চাপালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসএস অহলুওয়ালিয়া। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অথবা সরকারি মুখপাত্রের তরফে নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যম সূত্রেই যা ছড়ানোর ছড়িয়েছে।
শনিবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এসএস অহলুওয়ালিয়া। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘গত কয়েকদিনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক, দুই ধরনের সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টই পড়েছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যও শুনেছি। পাকিস্তানে বোমাবর্ষণের পর রাজস্থানের চুরুতে ভাষণ দিয়েছিলেন উনি। সেখানে একবারের জন্যও কি ৩০০ জঙ্গি মারা গিয়েছে বলেছিলেন মোদীজি? বিজেপির কোনও মুখপাত্রের তরফে কি জঙ্গিমৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়েছে? অমিত শাহ কি তেমন কিছু বলেছেন?’’
পাকিস্তানকে বার্তা দিতেই নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনা সেখানে বোমা ফেলে বলেও দাবি করেন অহলুওয়ালিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘সমস্ত পাহারা টপকে শত্রুর বাড়ির পাশে বোমা ফেলেছি বটে। তবে তাতে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি হোক চাইনি। শুধুমাত্র কড়া বার্তা দেওয়াই উদ্দেশ্য ছিল আমাদের, যাতে বোঝানো যায় যে, শত্রুপক্ষকে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে আমাদের।’’
শিলিগুড়িতে এসএস অহলুওয়ালিয়া।
আরও পড়ুন: অভিনন্দনের শরীরে যন্ত্র ঢোকায়নি পাকিস্তান, মেরুদণ্ড-পাঁজরে চোট, জানালেন চিকিৎসকরা
আরও পড়ুন: জইশ প্রধান, মোস্ট ওয়ান্টেড মাসুদ আজহার মৃত? জল্পনা তুঙ্গে
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয় লক্ষ্য করে হামলা চালায় পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। তাতে ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়। সেই হামলার জবাব দিতেই ১১দিন পর নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাক-অধ্যুষিত কাশ্মীর, বালাকোট এবং চাকোটিতে বোমা ফেলে আসে ভারতীয় বায়ুসেনা। ধ্বংস করে দেয় জঙ্গিদের একাধিক প্রশিক্ষণ শিবির। বিষয়টি সামনে আসার পর বায়ুসেনার সেই অভিযানে ৩০০-৩৫০ জঙ্গির মৃত্যু হয় বলে দাবি করতে শুরু করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে বিজেপি বিরোধী দলগুলি। তারই প্রেক্ষিতে এ দিন সাফাই দিতে দেখা যায় অহলুওয়ালিকে। তবে তাঁর মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই নতুন করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছে বিরোধী শিবির। রবিবার নিজেদের টুইটার হ্যান্ডলে অহলুওয়ালিয়ার ওই ভিডিয়োটি পোস্ট করে সিপিএম-এর তরফে প্রশ্ন তোলা হয়, ‘অহলুওয়ালিয়া বলছেন, মোদী-শাহ ৩০০ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে কখনও বলেননি। আবার প্রাণহানি হোক তেমনটাও নাকি চাননি ওঁরা। এতদিন তো পাকিস্তানে জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া নিয়ে হম্বিতম্বি করছিলেন। তাহলে এখন কি সেই দাবি থেকে পিছু হটছে মোদী সরকার? অহলুওয়ালিয়ার দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে এতদিন দেশবাসীকে মিথ্যা বোঝাচ্ছিল মোদী সরকার। আর এখন বলছে, প্রাণহানি এড়াতে জঙ্গিদের নিকেশ করা হয়নি।’
এর আগে পাকিস্তানে জইশ-ই -মহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবিরগুলি লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হয়েছিল বলে দাবি করেন বিদেশসচিব বিজয় গোখেল। অহলুওয়ালিয়ার মন্তব্যে নতুন করে বিতর্ক মাথাচাড়া দিলেও, এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্যকরেননি তিনি।
(মালদহ, দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং সহ উত্তরবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর পড়ুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)