গাছ লাগিয়ে টাকা মিলবে কন্যাশ্রীতে

গত বছর কন্যাশ্রী দিবসের দিন থেকে বেশ কিছু স্কুলের ছাত্রীদের ক্যারাটে শেখানোর উদ্যোগ নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। উদ্দেশ্য ছিল মেয়েদের মানসিক ও শারীরিক দৃঢ়তা দেওয়া। এ বার কন্যাশ্রী দিবসে এমজিএনআরইজিএ ও পোস্টাল ডিপার্টমেন্টকে সহযোগী করে ফের দুটি নতুন ভাবনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩১
Share:

কন্যাশ্রী দিবসের প্রস্তুতি সিউড়িতে। শনিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

গত বছর কন্যাশ্রী দিবসের দিন থেকে বেশ কিছু স্কুলের ছাত্রীদের ক্যারাটে শেখানোর উদ্যোগ নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। উদ্দেশ্য ছিল মেয়েদের মানসিক ও শারীরিক দৃঢ়তা দেওয়া। এ বার কন্যাশ্রী দিবসে এমজিএনআরইজিএ ও পোস্টাল ডিপার্টমেন্টকে সহযোগী করে ফের দুটি নতুন ভাবনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রথমত ১০০ দিন প্রকল্পের মাধ্যমে গাছ লাগানো এবং সেই কাজ থেকে প্রাপ্য টাকা থেকে মেয়েদের জন্য রেকারিং ডিপোজিট স্কিম বা সুরক্ষিত ভাবে ক্ষুদ্র সঞ্চয় এর সূচনা। তবে এ বার আর শুধু কন্যাশ্রীর প্রাপকেরা নয়, জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তাঁদের পরিবারকেও।

Advertisement

জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, জেলায় যত কন্যাশ্রী প্রাপক রয়েছে তাঁদের প্রত্যেককে পাঁচটি করে গাছ দেওয়া হবে। যার সূচনা হচ্ছে রবিবার থেকেই। সামনের একমাসের মধ্যে সকলেই গাছ পাবে। জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলছেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে পাঁচটি গাছ লাগানোর ব্যবস্থা হবে। প্রাপ্য টাকার মধ্যে ১০০ টাকা দিয়েই সূচনা হবে আরডি প্রকল্পের। যাতে মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রীপ্রাপক পরিবারগুলি সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে ওঠে।’’

বাল্যবিবাহ রুখতে এবং মেয়েরা যাতে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারে তার জন্যই রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করে। সঙ্গে আরও কী ভাবে ছাত্রীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা দেওয়া যায় চেষ্টা চলছে। অন্য কয়েকটি জেলার সঙ্গে বীরভূমের ভাবনাও সেই লক্ষ্যেই, জানাচ্ছে প্রাশাসন। জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, মোট ৭৭৬টি স্কুল ও ৫২টি কলেজ মিলিয়ে এ জেলার মোট কন্যাশ্রী প্রাপকের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ। তাদের মধ্যে কে-১ প্রাপকের সংখ্যা ৮৮ হাজার (সকলেই ১৩ থেকে ১৮বছর বয়সী ছাত্রী)। প্রত্যেকে প্রতি বছর ৭৫০ টাকা করে পায়। অন্য দিকে, কে-২ অর্থাৎ, ১৮-১৯বছর বয়সী ছাত্রী রয়েছে ১৮ হাজার। যারা প্রত্যেকে এককালীন ২৫ হাজার টাকা করে পেয়েছে।

Advertisement

প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক মৃণ্ময় দাস বলছেন, ‘‘রবিবার দিনটিকে উদযাপন প্রতিটি ব্লক নানা উদ্যেগ নিয়েছে। জেলার অনুষ্ঠানটি হবে সিউড়িতে। রয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। থাকছে প্রকল্প বিষয়ক নাচ, গান আবত্তি, নাটক, পত্রিকা প্রকাশ এবং কেরিয়ার কাউন্সেলিং-নিয়ে বুকলেট প্রকাশ ইত্যাদি।’’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবে জেলার বাছাই আটটি স্কুলের ১২০ জন ছাত্রী।

কী ভাবে কাজ করবে এই প্রকল্প?

জেলা এমজিএনআরইজিএ সেল জানাচ্ছে, ঠিক হয়েছে পুর এলাকার বাইরে পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা স্কুলগুলির কন্যাশ্রী প্রাপকদের নিয়েই কন্যাশ্রীর সঙ্গে ১০০ দিনের প্রকল্পের গাছ লাগানো চলবে। যে সব কন্যাশ্রী প্রাপকেরা গাছ পেল, সেগুলি লাগানোর জন্য নিয়োগ করা হবে তাদের পরিবাবের সদস্যদেরও। যে সব কন্যাশ্রী প্রাপকের পরিবারের জবকার্ডধারী সদস্য এই অর্থবর্ষে অন্তত ১৫ দিনের কাজ করেছেন, গাছগুলি লাগানোর জন্য তাঁদেরকেই কাজে লাগানো হবে। পাঁচটি গাছ লাগানোর জন্য একটি শ্রমদিবসের ১৭৬ টাকা দেবে ওই প্রকল্প। সেই টাকা থেকে ১০০ টাকা দিয়ে স্বল্পসঞ্চয়ের সূচনা। জেলা পোস্টাল দফতর জানাচ্ছে প্রতিমাসে ১০০ টাকা করে পাঁচবছর রাখলে মেয়াদ শেষে পরিবারটি ফেরত পাবে ৭৩০০ টাকা।

এমজিএনআরআজিএ-এর জেলার নোডাল অফিসার বিল্বদল রায় বলছেন, ‘‘রবিবার থেকে গাছ লাগানোর দরুণ যে টাকা পাবেন প্রাপকের পরিবারগুলি। তাঁদেরকে বলা হয় মেয়েদের জন্য স্বল্প সঞ্চয়ের সূচনা করুন। এটি বাধ্যতামূলক নয় একটি প্রচারমূলক কর্মসূচি। যে কন্যাশ্রী প্রাপকের পরিবারে জবকার্ড নেই, অথবা সম্পন্ন পরিবার তাঁদেরকেও একই অনুরোধ করা হবে। আর গাছগুলি দেখভালের দায়িত্বে কন্যাশ্রী প্রাপক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। গাছ বড় হয়ে গেলে ফল ও কাঠের সুবিধা তো রইলই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement