এই মুড়ি, তেলেভাজা, পরক্ষণেই মিষ্টি। তার পর আবার খাই খাই। হাতের কাছে থাকে চিপস, চানাচুর শেষ হতে না হতেই মনে হয়, এ বার তা হলে অন্য কিছু খাওয়া যাক।
খিদে নয়, তবু খাই খাই! এমন পরিস্থিতির সঙ্গে কম-বেশি সকলেই পরিচিত। কারও সন্ধ্যা হলেই মন এটা-সেটা খেতে চায়। চেয়েও নিজেকে বশে রাখা যায় না। কারও আবার দিনভর টুকিটাকি খাওয়া চলতেই থাকে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, একটার পর একটা খাওয়ার ইচ্ছা যে খিদে থেকে বা পেট ভরছে না বলেই হয়, এমনটা নয়। বরং কিছু কিছু শারীরিক বা মানসিক পরিস্থিতি খাওয়ার ইচ্ছা বাড়িয়ে দেয়। পেট ভরা থাক না থাক— মন চায় খেয়েই যেতে।
মানসিক চাপ: মানসিক চাপও অনেক সময় খাওয়ার ইচ্ছা বাড়িয়ে দেয়। কারও ক্ষেত্রে যেমন অতিরিক্ত দুর্ভাবনা বা মানসিক চাপে খাওয়ার ইচ্ছা কমে, কারও ক্ষেত্রে উল্টোটাও হয়। কর্টিসল নামক হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় দুশ্চিন্তা হলে। এই হরমোনই বিশেষ বিশেষ খাবারের প্রতি লোভ বাড়িয়ে দেয়। সর্ব ক্ষণ কিছু না কিছু খেতে ইচ্ছা করে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া, বিশেষত ভাজাভুজি স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। খাওয়ার ইচ্ছা হলে— খাওয়ার জায়গা থেকে দূরে কোথাও হেঁটে আসতে পারেন। লম্বা শ্বাস নিন। মন অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিলেও, খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
রজোনিবৃত্তি: ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া বা রজোনিবৃত্তির সময় মনমেজাজে প্রভাব পড়ে। এই সময়ে শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনের মধ্যেও নানা রকম পরিবর্তন আসতে শুরু করে। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ফলে এই সময় খাই খাই প্রবণতা তৈরি হয় কারও কারও। শুধু মেনাপজ় নয়, পেরিমেনোপজ়ের সময়েও এমনটা হতে পারে। রজোনিবৃত্তি হয়ে যাওয়া মানেই মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়, সে কারণে শরীরে নানা বদল আসে। ইস্ট্রোজেন হরমোন খিদে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তার মাত্রা কমে গেলে প্রভাব পড়ে দৈনন্দিন জীবনেও।
অপর্যাপ্ত ঘুম: প্রতি দিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। ঘুম যাঁদের ঠিকমতো হয় না, তাঁদেরও অনেক সময় খাই খাই প্রবণতা তৈরি হয়। তার কারণ হল হরমোনের ভারসাম্যের অভাব। ঘুম শুধু শরীরকে বিশ্রাম নিতে সাহায্য করে না, এর সঙ্গে হরমোনের ভারসাম্যের গভীর যোগও রয়েছে। দিনের পর দিন ঠিকমতো ঘুম না হলে প্রভাব পড়ে হরমোনের মাত্রাতেও। ঘ্রেলিন এবং লেপটিন নামক হরমোন ক্ষুধাবোধ নিয়ন্ত্রণ করে। ঘুম কম হলে ঘ্রেলিনের মাত্রা বাড়ে, যা খিদের প্রবণতাকে বাড়িয়ে দেয়।