পথে কিছুটা দেরি হলেও বাংলায় বর্ষা এসে গিয়েছে। খাতায়-কলমে অন্তত এটাই বলছে আবহাওয়া দফতর। কিন্তু আষাঢ়ের প্রাক্কালে শুক্রবার বঙ্গবাসীকে সইতে হল তাপপ্রবাহ! যা কিনা আসলে ভরা গ্রীষ্মের চরিত্র।
দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি হলেই তাকে বলা হয় তাপপ্রবাহ। কলকাতায় এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে সাত ডিগ্রি বেশি! জেলাতেও পারদ ছিল ৪০-৪১ ডিগ্রির কাছেপিঠে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আজ, শনিবারেও কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহ বইবে। এমন পরিস্থিতি চলতে পারে রবিবারেও।
বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার মতো শুখা জেলাতেও এ বার চৈত্র-বৈশাখে তাপপ্রবাহের দেখা মেলেনি। বর্ষা সমাগমের পরে সে হঠাৎ হাজির হল কেন? হাওয়া অফিস এতে প্রকৃতির খামখেয়ালই দেখছে। তাদের তথ্য বলছে, গত এক দশকে দু’বার জুনে কলকাতায় দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। ২০১২ সালের ৪ জুন এবং ২০১৬-র ১১ জুন। কিন্তু ওই দু’বছর বর্ষা এসেছিল ১৭ জুন নাগাদ। অর্থাৎ তাপপ্রবাহ এসেছিল বর্ষার আগেই। মৌসুমি বায়ুর আগমনের পরে নয়। জুনে সর্বাধিক গরম পড়েছিল ১৯২৪ সালের ১ জুন (৪৩.৯ ডিগ্রি)। নির্ঘণ্ট অনুযায়ী ১ জুন বর্ষা ঢোকার কথাই নয়। এ বার বর্ষা ঢোকার পরেও এমন উলটপুরাণ কেন? তা হলে কি বর্ষা আসেইনি?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাসের ব্যাখ্যা, বর্ষা ঢুকেছে ঠিকই। তবে মৌসুমি বায়ু দুর্বল হয়ে প়ড়েছে। ফলে সাগর থেকে পুবালি বাতাস রাজ্যে ঢুকছে না। তার বদলে বিহার-ঝাড়খণ্ডের গরম হাওয়া ঠেলে ঢুকছে বাতাসে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় রোদে গরম হয়ে উঠছে মাটি। তাতেই এই পরিস্থিতি।
বৃষ্টির কী খবর?
‘‘আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই,’’ বলছেন অধিকর্তা। অতএব বর্ষা কেবল খাতাতেই। বৃষ্টির জন্য হাপিত্যেশ করা ছাড়া উপায় নেই।