কালিম্পঙের জমি ধরে রাখতে হরকার দাবিকে সমর্থন মোর্চার

হরকাবাহাদুর ছেত্রীর অনুগামীরা সকালেই পোস্টার সেঁটে কালিম্পংকে পৃথক জেলা করার দাবি তুলেছিলেন। তখন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কিছু নেতা সেটাকে বিভাজনের রাজনীতি বলে মত দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৪১
Share:

পৃথক জেলার দাবিতে পোস্টার কালিম্পঙে। — নিজস্ব চিত্র।

হরকাবাহাদুর ছেত্রীর অনুগামীরা সকালেই পোস্টার সেঁটে কালিম্পংকে পৃথক জেলা করার দাবি তুলেছিলেন। তখন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কিছু নেতা সেটাকে বিভাজনের রাজনীতি বলে মত দেন। কিন্তু দিন গড়াতেই তাঁরা বুঝতে পারেন, রাজ্য সরকার কালিম্পংকে ওই স্বীকৃতি দিলে সরে যাবে তাঁদের পায়ের তলার জমি। বিকেলেই সুর বদলে দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি জানান, গোড়া থেকেই কালিম্পংকে আলাদা জেলা হিসেবে চাইছেন তাঁরা। ৩ মহকুমা পুনর্গঠন করে আরও জেলা তৈরির প্রস্তাবও দেবেন বলে জানান রোশন।

Advertisement

প্রথমে হরকাবাহাদুরের দল থেকে পদত্যাগ। তারপর দার্জিলিঙের বিধায়ক ত্রিলোক দেওয়ানের দল ও বিধায়ক পদ ছাড়া। পরপর দু’টি ঘটনায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। তবু স্বস্তি ছিল, কার্শিয়াঙের বিধায়ক রোহিত শর্মার অবস্থান। বিধায়ক পদ ছাড়লেও দল ছাড়েননি তিনি। তবু নেতাদের সমালোচনা করে দুই বিধায়কের পদত্যাগ করায় জোর ধাক্কাই খেয়েছিলেন মোর্চারা।

এ দিন কালিম্পংয়ে পোস্টার পড়াতে গু‌ঞ্জন শুরু হয়, সেখানে নিজের পায়ের তলার জমি শক্ত করতেই মাঠে নেমেছেন হরকাবাহাদুর। তাঁর সঙ্গে এ বার প্রকাশ্য লড়াইয়ে গুরুঙ্গও। গুরুঙ্গ-অনুগামীরা বুঝেছেন, ‘লড়াই’ জিততে হলে হরকাবাহাদুরকে প্রকাশ্যে সমর্থন করতে হবে। পোস্টারগুলিতে নেপালি ও ইংরেজি হরফে লেখা, ‘আমরা কালিম্পং জেলার পক্ষে। হরকাবাহাদুর ছেত্রী ভয় পাবেন না। কালিম্পঙের মানুষ আপনার সঙ্গে আছেন।’ হরকাবাহাদুর জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ডেলোতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে পৃথক জেলার দাবি জানানোর পরেই দল ছাড়েন তিনি। আজও সেই একই দাবি নিয়ে কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

Advertisement

হরকাবাহাদুর জানান, কালিম্পংকে আলাদা জেলা করার কথা বিধানসভায় আগেও বলা হয়েছে। কালিম্পংকে মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত করার বহু কারণও আছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বলে হরকাবাহাদুর জানিয়েছেন। হরকাবাহাদুরের সমর্থনে পোস্টার পড়াতে রাজনীতি-ই দেখছেন স্থানীয়রা। কারণ, অতীতে সুবাস ঘিসিঙ্গ একটা পোস্টার সেঁটেই আলাদা দলের কথা ঘোষণা করেছিলেন। পরে বিমল গুরুঙ্গও পোস্টারে পৃথক দলের কথা জানিয়েছিলেন। এমনকী, গুরুঙ্গের লাগাতার বন্‌ধের ডাকের প্রতিবাদেও পোস্টার পড়ে। এ বারও পোস্টারকে গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন মোর্চা নেতৃত্ব।

পাহাড়ের রাজনীতির মধ্যে মোর্চাত্যাগী হরকাবাহাদুর এবং ত্রিলোক দেওয়ানের বাড়িতে পাহারা দিচ্ছে পুলিশ। দু’জনেই এখন কলকাতায়। এই দু’জনের ইস্তফা নিয়ে রোশন গিরি বলেন, ‘‘আমরা ওঁদের কোনও চিঠি পাইনি। তাঁরা দল ছেড়ে থাকলেও, মোর্চায় কোনও প্রভাব পড়বে না।’’

ভ্রম সংশোধন

মঙ্গলবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আরও দুই নেতার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা সংক্রান্ত প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা হয়েছে ‘মোর্চা থেকে আরও দুই বিধায়কের পদত্যাগ’। আদতে এক জন দল ছেড়েছেন, কিন্তু আর এক জন বিধায়ক পদ ছাড়লেও দলে রয়েছেন। এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন