বর্ষা নামতেই মশাবাহিত রোগও বাড়ছে রাজ্যে।
কিছু দিন আগেই কলকাতার এক ডাক্তারি ছাত্রীর রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর রক্ত পরীক্ষাতেও ‘এনএসওয়ান পজিটিভ’ হয়েছিল। এ বার হুগলির বৈদ্যবাটীর জ্বরে আক্রান্ত এক বৃদ্ধের রক্তের নমুনা পরীক্ষাতেও ‘এনএসওয়ান পজিটিভ’ হল।
রাম পাল নামে বছর বাষট্টির ওই ব্যক্তি বৈদ্যবাটীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কালীতলা লেনের বাসিন্দা। তাঁর পরিজনদের দাবি, তাঁর ডেঙ্গি হয়েছে। চন্দননগরের একটি নার্সিংহোমে তিনি চিকিৎসাধীন। ওই নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধের ডেঙ্গি হয়েছে কিনা, তা এখনই নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়। এ জন্য আরও পরীক্ষা দরকার। তবে তাঁর প্লেটলেট স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কমেছে।
বছরের গোড়া থেকেই মশা নিয়ন্ত্রণে পুরসভা, পঞ্চায়েতগুলিকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। গত বছর ডেঙ্গিতে বৈদ্যবাটীর দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। পুরবাসীর দাবি, বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে জ্বরের প্রকোপও দেখা দিয়েছিল। তার পরেও এ বার শিক্ষা নেয়নি পুরসভা। কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেশের অপরিচ্ছন্ন শহরগুলির মধ্যে ঠাঁই পেয়েছে বৈদ্যবাটী।
১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিতা ঘোষ বলেন, ‘‘পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত বাড়ি বাড়ি আসেন না। এলেও জ্বর-ডেঙ্গির তথ্য রাখার জন্য যে কার্ড দেওয়া হয়েছে, তাতে সই করিয়ে চলে যান। মাসে একবার ওয়ার্ড পরিষ্কার করা হয়। নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার বা মশার লার্ভা মারার তেল ছেটানো হয় না।’’ রামবাবুর স্ত্রী আরতি পাল জানান, বুধবার দুপুরে স্বামীর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। গায়ে ব্যথাও ছিল। শুক্রবার দুপুরে তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। শনিবার রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। আরতিদেবীরও অভিযোগ, ‘‘এলাকায় আবর্জনা ঠিক মতো পরিষ্কার করা হয় না।’’
অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর শঙ্কর দাস বলেন, ‘‘ওয়ার্ডটি যথেষ্ট বড়। সাফাইকর্মী যেমন পাওয়া যায়, তেমন কাজ হয়। একটি জায়গা এক-দেড় মাস অন্তর পরিষ্কার হয়। ‘আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করি। কারও যাতে ডেঙ্গি না হয়, সে জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন জানান, ওই এলাকাটি নিচু হওয়ায় জল জমার সমস্যা রয়েছে। বর্ষায় অতিরিক্ত লোক
নামিয়ে সাফাই অভিযান চলছে। মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে যা করার, পুরসভা সবই করবে।