কাছে রেখেই কৃষ্ণকে সুস্থ করতে চান মা

কৃষ্ণের চিকিৎসা করাতে চান তার মা। তবে দুরে পাঠিয়ে নয়, কাছে রেখেই ছেলেকে সুস্থ করতে চান তিনি। আলিপুরদুয়ার মহিলা কলেজের সামনে, পথের ধারে কৃষ্ণকে বেঁধে রেখে কাজের খোঁজে যেতেন তার মা। রোদে জলে গত কয়েক মাস ধরে পথের ধারেই বাধা থাকত বছর ছয়েকের শিশুটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৬ ০৮:১২
Share:

মায়ের সঙ্গে শিশু। — নিজস্ব চিত্র

কৃষ্ণের চিকিৎসা করাতে চান তার মা। তবে দুরে পাঠিয়ে নয়, কাছে রেখেই ছেলেকে সুস্থ করতে চান তিনি।

Advertisement

আলিপুরদুয়ার মহিলা কলেজের সামনে, পথের ধারে কৃষ্ণকে বেঁধে রেখে কাজের খোঁজে যেতেন তার মা। রোদে জলে গত কয়েক মাস ধরে পথের ধারেই বাধা থাকত বছর ছয়েকের শিশুটি। সেই সকাল থেকে দুপুর গড়ানো পর্যন্ত। সংবাদমাধ্যমে সেই খবর সামনে আসতেই শুক্রবার সকালে মহকুমা শাসকের নির্দেশে আলিপুরদুয়ার শহরের লোহারপুল এলাকায় গিয়ে মা ও শিশুর খোঁজ নেন প্রশাসনের কর্তারা। কথা বলেন শিশুটির মায়ের সঙ্গে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসার পরে বাপের বাড়িতেও কার্যত অবহেলিত রিনা সাহা ও তাঁর সন্তান। তাই বাধ্য হয়ে অসুস্থ ছেলেকে পথের ধারে বেঁধে কাজের খোঁজে ভবঘুরের মত ঘুরে বেরান মা। আর রোদ ঝড়ে রাস্তার ধারেই দিনভর বাঁধা থাকে শিশুটি।

আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক সমীরণ মণ্ডল বলেন, “ আধিকারিকরা এলাকায় গিয়েছিলেন। কিভাবে শিশুটির চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যবস্থা করা যায় তা দেখছি।”

Advertisement

এলাকার বাসিন্দা অজিত ঘোষ জানান, ঝড় বৃষ্টিতে কৃষ্ণকে ওর মা বেঁধে রেখে চলে যায়। এমন সময় গিয়েছে মুষুল ধারে বৃষ্টি ও ঝড়ের সময়েও শিশুটি রাস্তার ধারে বসে রয়েছে দড়ি বাঁধা অবস্থায়। ও বিষয়গুলি বুঝতে পারে না। নিজের মতো খেলতে থাকে। তিনি বলেন, ‘‘ওদের থাকা, খাওয়ার সমস্যা রয়েছে। বাপের বাড়িতে থাকলেও ওদের দেখাশোনা করে না পরিবারের লোক। একটি পাঁচ ফুট বাই আটফুটের ভাঙা ঘরে থাকে। খাওয়ার কোনও ঠিক নেই। ছেলেটিকে বেঁধে না রাখলে ও রাস্তায় চলে যায়। এর আগে বেশ কয়েকবার চলন্ত গাড়ির সামনে চলে গিয়েছিল কৃষ্ণ।’’

রিনাদেবী জানান, তাঁর ভাইদের বাড়িতে থাকার জায়গা হয় না। একটি আইসিডিএস সেন্টার থেকে খাওয়া আনেন সেটাই ভরসা। ছেলের চিকিৎসা করাতে চান। তবে কৃষ্ণকে কাছ ছাড়া করতে চাননা তিনি। ছেলে প্রতিবন্ধী। কিন্তু শংসাপত্র জোগাড় করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি। এ দিন সরকারি আধিকারিকদের কাছে সমস্যাগুলি জানান তিনি। অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি রিনাদেবীর ভাইয়ের বৌ পম্পা পাল। তিনি বলেন, ‘‘ও বাড়িতে থাকে না। কি করব আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন