ছবি: সংগৃহীত
সমস্ত সংসদীয় কমিটি থেকে তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়েছিল। সংসদের অধিবেশনও নেই। তা সত্ত্বেও গত সপ্তাহে ‘গোপন মিশনে’ দিল্লি এসেছিলেন মুকুল রায়। সূত্রের খবর, সে সময় তিনি একাধিক বৈঠক করেন অরুণ জেটলি, ভূপেন্দ্র যাদব, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের সঙ্গে। সেই বৈঠকেই তৃণমূল ছাড়ার ব্যাপারে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত পান মুকুল।
তবে মুকুল এখনই সম্ভবত সরাসরি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছে ওই সূত্রটি। দু’বছর আগে তাঁর তৈরি জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেস-কে নিয়েই এগোবেন। মঞ্চটি বকলমে বিজেপির হয়ে কাজ করবে। গত সপ্তাহে মুকুলের নির্দেশে এই মঞ্চের কয়েক জন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করে জানিয়ে আসেন যে, কমিশনে নথিভুক্ত এই দলটি এখনও চলছে।
অতীতে দলনেত্রীর বিশ্বস্ত দূত হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে দিল্লির নেতাদের পূজা উপহার দেওয়ার কাজটি করতেন মুকুলই। মমতা এ বারেও রাজনাথ সিংহ-সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপহার পাঠিয়েছেন। তবে এ বার সেই কাজটি মমতা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের রেসিডেন্ট কমিশনারকে দিয়ে।
মুকুল তাঁর সাম্প্রতিক সফরে রাষ্ট্রপতি, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী-সহ বিজেপির অন্য নেতাদের এমনকী প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে শারদীয় উপহার হিসেবে ধুতি-পাঞ্জাবি দিয়েছেন। এবং তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেছেন, ‘‘এটা নিছক বাংলার পুজোর শুভেচ্ছা। প্রণববাবুকেও তো দিয়েছি। সরকারের মন্ত্রীরা তো আর উপহার নিতে পারেন না। এই সরকারে যাঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে, তিনি অরুণ জেটলি।’’
সূত্রের খবর, বিজয়া এবং কালীপুজোর মধ্যবর্তী সময়ে মুকুল তাঁর দলত্যাগের কথা জানাবেন বলে ঠিক ছিল। ৮ অক্টোবর শুভ দিন দেখাও ছিল। কিন্তু তৃণমূল সোমবারই তাঁকে সাসপেন্ড করবে, এই আঁচ পেয়েই তড়িঘড়ি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মুকুল।
বিজেপি সূত্রের খবর, আজ সকালে কৈলাসের সঙ্গে কথা বলে সাংবাদিক বৈঠকে যান মুকুল। যদিও মুকুল নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব প্রকাশ্যে দূরত্ব বজায় রাখছে। কৈলাসের কথায়, ‘‘মুকুল আগে বিজেপিতে আসার প্রস্তাব দিন। তার পর রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ বিজেপি সূত্রে খবর, দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় অমিত শাহ এখনই মুকুলকে সরাসরি দলে নিতে নারাজ। এখন তাঁকে বিজেপিতে না নিলে দুর্নীতির দায় দলের ঘাড়ে পড়বে না।