মুকুল রায়।
বিশ্ব বাংলা বিতর্কে ফের সুর চড়ালেন মুকুল রায়। আজ তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের সচিব রাজীব সিংহ। শুক্রবার বিজেপির সভা থেকে তাঁর তোলা অভিযোগ সামলাতে এই দু’জন আমলাকে আসরে নামিয়েছিল রাজ্য সরকার। আজ সেই সূত্র ধরেই ওই দুই আমলাকে চিঠি পাঠিয়ে মুকুলের অভিযোগ, বিশ্ব বাংলা নিয়ে শাসক দলের হয়ে জবাব দিতে গিয়ে অসত্য তথ্য পরিবেশন করেছেন তাঁরা। শাসক দলের নির্দেশে প্রকৃত তথ্য চেপে গিয়ে মানুষকে ভুল তথ্য জানানো হয়েছে। মুকুলবাবুর দাবি, আমলা হয়ে এ ভাবে শাসক দলের হয়ে মুখ খুলে ওই দু’জন ‘সার্ভিস রুল’ ভেঙেছেন। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহের দ্বারস্থ হয়েছেন মুকুলবাবু।
বিশ্ব বাংলা লোগো বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে তৃণমূল। সম্প্রতি বিজেপির সভা থেকে মুকুল রায় দাবি করেন, বিশ্ব বাংলা কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়। এটি একটি বেসরকারি কোম্পানি। মালিক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিকানা ৩০বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট। যা কিনা মুখ্যমন্ত্রীরই বাড়ির ঠিকানা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের হয়ে মুকুলবাবুর অভিযোগের জবাব দেন স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য ও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের সচিব রাজীব সিন্হা। তাঁদের বক্তব্যের নির্যাস ছিল, বিশ্ব বাংলা ব্র্যান্ড ও লোগো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্টি। সেটি তিনি স্বেচ্ছায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দিয়েছেন। ওই ব্র্যান্ড ও লোগো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নামেই নথিভুক্ত রয়েছে বলেও দাবি করেন অত্রিবাবু। সরকারি ব্র্যান্ড কোনও ভাবে কোনও ব্যক্তি ব্যবহার করলে সরকার যে তাঁকে রেয়াত করবে না তাও বুঝিয়ে দেন স্বরাষ্ট্রসচিব।
তিনি জানান, সম্প্রতি এক ব্যক্তি বিশ্ব বাংলা ব্র্যান্ড ব্যবহার করায় তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করেছিল রাজ্য। রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের জবাবে স্বরাষ্ট্রসচিবের মুখ খোলা বিরল ঘটনা।
আজ চিঠিতে মুকুলবাবু প্রধানত দু’টি প্রশ্ন তোলেন। সরকারের ট্রেডমার্ক অথরিটি-র অধীনস্থ ট্রেডমার্ক জার্নালের নথি তুলে ধরে মুকুলবাবু জানিয়েছেন, ওই জার্নালের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের ৮ মে পর্যন্ত ওই লোগোর মালিক ছিলেন অভিষেক। ৮ সেপ্টেম্বর লোগোর মালিকানা দাবি করে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতর। মুকুলবাবুর দাবি, ওই লোগোর প্রকৃত মালিক কে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তাহলে ওই দুই আমলা কী ভাবে ওই লোগোকে সরকারের সম্পত্তি বলে দাবি করতে পারেন? মুকুলবাবুর দ্বিতীয় অভিযোগ, লোগোর মালিকানা নিয়ে বিতর্ক চলছে জেনেও ওই দুই আমলা বিষয়টি চেপে গিয়ে মানুষকে ভুল তথ্য দিয়েছেন।