মাথার উপর দিদি। মুকুল-পুত্রের ব্যানার। ছবি: নিজস্ব চিত্র
শেষ মুহূর্তে প্রশাসনের তরফে আমন্ত্রণ পেলেও কংগ্রেস-পরিচালিত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ বয়কট করল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা। বুধবার রবীন্দ্র সদনে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যোগ দিচ্ছেন না কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি।
জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘জেলা পরিষদে নিয়মমাফিক আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে।’’ কিন্তু কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘‘নাম-কা-ওয়াস্তে’’ এই আমন্ত্রণে জেলা পরিষদের সদস্য ছাড়া আর কোনও জনপ্রতিনিধিকে ডাকা হয়নি। একে ‘‘অপমান’’ বলেই মনে করছেন তাঁরা। মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা পরিষদের সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার বলেন, ‘‘প্রশাসনের অঙ্গ কেবল জেলা পরিষদ নয়। পঞ্চায়েত সমিতি, পঞ্চায়েত, পুরসভা ছাড়া প্রশাসন চলে না। অথচ এরা সকলেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ব্রাত্য।’’
কংগ্রেসের বয়কট প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে জেলা তৃণমূল মান্নান হোসেন বলেন, ‘‘কংগ্রেস কেবল টাকা চায়। উন্নয়নে সামিল হতে চায় না। মুখ্যমন্ত্রী সকলকে নিয়েই উন্নয়নে সামিল হতে চান বলেই ওদের ডাকা হয়েছিল।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘উন্নয়নের নামে মুখ্যমন্ত্রী সাইকেল বিতরণ করবেন। সেগুলোও নিম্নমানের।’’ তাঁর অভিযোগ, যে শহরে সভা করছেন মুখ্যমন্ত্রী, তার পুরপ্রধানকেও আমন্ত্রণ করেননি। কংগ্রেসের সাংসদ, বিধায়কদেরও বাদ রেখেছেন। তাই কংগ্রেসের কেউ সভায় যাচ্ছেন না।
মুখ্যমন্ত্রীর সভা ঘিরে বিতর্কের শুরু আগেই। ওই সভার জন্য শহরের ওয়াইএমএ মাঠে বালি আর কুচো পাথর ফেলা নিয়ে সোমবারই একদফা ঝড় বয়ে যায়। বিভিন্ন পরিবেশ সংগঠন সবুজ ধ্বংসের প্রতিবাদ করেছে। মঙ্গলবার জেলা কংগ্রেস বিরোধিতায় নেমেছে। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক দাসের অভিযোগ, রাজ্যের বাধায় বহরমপুরে রেলের ওভারব্রিজের কাজ বন্ধ। রাস্তায় কংগ্রেসের ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। বেলডাঙার হাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা শহরে মিছিল-মিটিং সভা পুরোপুরি বন্ধ রাখার ফতোয়া দিয়েছে প্রশাসন। ‘‘গোটা শহরে একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে,’’ দাবি অশোকবাবুর।
কংগ্রেসের দাবি, কিছু দিন আগে মুর্শিদাবাদের সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার কলকাতায় সভাধিপতিদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর একটি সভায় উন্নয়নের বৈঠকে বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের বাদ দেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ জানান। এর পুনরাবৃত্তি হবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী তখন আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার পরেও ব্রাত্য থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভা বয়কট করছে কংগ্রেস।
সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।