লক আপে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে উৎপল 

জিয়াগঞ্জের সপরিবার শিক্ষক খুনে মূল অভিযুক্ত উৎপল বেহেরার তাতে অবশ্য বিশেষ হোলদোল নেই। থালার কোণ ঘেঁষে তরকারির ঝোলটুকুও সাপটে খেয়ে ঘুমে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে সে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন  

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৪৬
Share:

—ফাইল চিত্র

সব্জি-রুটি দিয়ে প্রাতঃরাশ, দুপুরে ভাত-ডাল-তরকারি। রাতে সেই আলু-পটল, খান পাঁচেক রুটি।

Advertisement

জিয়াগঞ্জের সপরিবার শিক্ষক খুনে মূল অভিযুক্ত উৎপল বেহেরার তাতে অবশ্য বিশেষ হোলদোল নেই। থালার কোণ ঘেঁষে তরকারির ঝোলটুকুও সাপটে খেয়ে ঘুমে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে সে। পুলিশও জানিয়েছে, খাওয়া-দওয়া কিংবা লক-আপের দিনযাপনে তার বাড়তি চাহিদা নেই। তবে ঘুম তাকে গভীর শান্তি দিচ্ছে যেন। জেরা এবং প্রাত্যহিক বন্দি জীবনে ঘুমই তার একমাত্র কাজ।

মুর্শিদাবাদের সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘গ্রেফতার হওয়ার পরে ধাতস্ত হতে প্রথম দিকে কিছুটা সময় লেগেছিল উৎপলের। এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। প্রশ্নের উত্তরও দিচ্ছে কোনও রাখঢাক না রেখেই। তবে থানার কর্মীদের কাছে শুনেছি, সুযোগ পেলেই ঘুমিয়ে পড়ছে ওই যুবক।’’

Advertisement

পুলিশ এখন উৎপলের জবানবন্দি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে মিলিয়ে নিচ্ছে তার সত্যতা। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের প্রধান রঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘খুনের কথা কবুল করার পরে তার ভেতরে যে অস্থিরতা ছিল তা থেমে গিয়েছে। এই ঘুম তার অবসাদ।’’

এ দিকে জিয়াগঞ্জ খুনের ঘটনার তদন্তে এল ফরেন্সিক দল। শুক্রবার দুপুরে ছয় সদস্যের ওই দল জিয়াগঞ্জের লেবুবাগান এলাকায় বন্ধুপ্রকাশ পালের বাড়িতে পৌঁছন। সেখান থেকে তাঁরা রক্ত ও খাবারের নমুনা সংগ্রহ করেন। ফরেন্সিক দলের এক আধিকারিক চিত্রক্ষ সরকার বলছেন, ‘‘ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করেছি। সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা হবে।’’

গত ৮ অক্টোবর দশমীর দুপুরে জিয়াগঞ্জের লেবুবাগানের বাড়িতে খুন হন বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি এবং তাঁদের ছ’বছরের ছেলে অঙ্গন। তবে ঘটনার ১১ দিন পরে ফরেন্সিক দলের ঘটনাস্থলের পরিদর্শন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নিহতদের পরিবারের লোকজন। বন্ধুপ্রকাশের পরিবারের এক সদস্য বলছেন, ‘‘ফরেন্সিক দলের আরও আগে আসা উচিত ছিল।’’

যদিও চিত্রক্ষ সরকার জানান, ঘরের ভিতরে সবকিছু অবিকৃত ছিল। নমুনা সংগ্রহে কোনও অসুবিধা হয়নি। ফরেন্সিক দলের এক কর্তা বলছেন, ‘‘খুনির পায়ের ছাপ ও হাতের ছাপের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বন্ধুপ্রকাশের ঘরের দরজায় ও পিছনের দরজায় বেশ কিছু জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে।’’ এমনকি খুনে ব্যবহৃত ধারাল অস্ত্রও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন