সংগ্রহশালা গড়া হবে অ্যাকাডেমির মধ্যেই

এ দিনের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী জানান, বিদ্যাসাগরের দ্বিশততম জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদের লেখা একত্র করে একটি বই প্রকাশ করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৫
Share:

বিদ্যাসাগরের দ্বিশততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর বাদুড়বাগানের বাড়িতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখোমুখি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

বিদ্যাসাগর কলেজে তাঁর মূর্তি ভাঙার পরে সেখানে নতুন মূর্তি স্থাপন করে বিদ্যাসাগরের ২০০ বছর উপলক্ষে একটি মিউজ়িয়াম বা সংগ্রহশালা গড়ার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিদ্যাসাগরের দ্বিশততম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তাঁর বাসস্থান বাদুড়বাগানে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন মিউজ়িয়াম করতে। এ দিন বিদ্যাসাগরের অ্যাকাডেমির শুভ সূচনা হল। বিদ্যাসাগর চর্চার একটি জায়গা হল এই অ্যাকাডেমি। এর মধ্যে থাকবে মিউজ়িয়ামও।’’

Advertisement

এ দিনের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী জানান, বিদ্যাসাগরের দ্বিশততম জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদের লেখা একত্র করে একটি বই প্রকাশ করা হবে। সেই সঙ্গে বিদ্যাসাগরের অপ্রকাশিত অমুদ্রিত রচনা একসঙ্গে করে একটি বই প্রকাশ করবে শিক্ষা দফতর। ‘‘বিদ্যাসাগরের নামে কোনও পদক চালু করা যায় কি না, সেই বিষয়টিও আমরা ভেবে দেখছি। স্কুল-কলেজে কোনও রচনা প্রতিযোগিতায় সেরা ছাত্র বা ছাত্রীকে সেই বিদ্যাসাগর পদক দেওয়া যেতে পারে,’’ বলেন পার্থবাবু।

বিদ্যাসাগর কলেজে এ দিন তাঁর একটি ব্রোঞ্জমূর্তির আবরণ উন্মোচন শিক্ষামন্ত্রী। ওই মূর্তির শিল্পী গৌতম পালের প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, ‘‘খুব অল্প সময়ে এই মূর্তি তৈরির কাজ শেষ করেছেন কৃষ্ণনগরের শিল্পী।’’ পার্থবাবু জানান, বিদ্যাসাগরের ছোট-বড় মূর্তি তৈরি করে যদি তাঁর পুরো জীবনের কর্মকাণ্ড বোঝানো যায়, তা হলে খুব ভাল হয়। তাঁর ইচ্ছা, অ্যাকাডেমিতেই থাকবে মূর্তির মাধ্যমে বিদ্যাসাগরের জীবনের প্রদর্শনী। কুমোরটুলির শিল্পীরা বা গৌতমবাবুরা সেই মূর্তি বানাতে পারেন। বিদ্যাসাগরের বাদুড়বাগানের বাড়িতে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ এ দিনের অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘বাদুড়বাগানের এই বাড়িতেই শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গে বিদ্যাসাগরের সাক্ষাৎ হয়েছিল। এই বাড়ি ভারতের অন্যতম তীর্থস্থান।’’

Advertisement

শিক্ষামন্ত্রীর মতে, সমাজ সংস্কারে বিদ্যাসাগর যে-সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই শুরু করেছিলেন, সেই লড়াই এখনও অব্যাহত। অন্য ভাবে এই লড়াইটা করতে হবে। এ দিনের অনুষ্ঠানে যাবদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে আমরা একটা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছি। তার মোকাবিলার জন্য আমাদের বারবার ফিরে যেতে হবে বিদ্যাসাগরের কাছেই। গণতন্ত্র মানে এই নয় যে, আমার গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করার জন্য অন্যের গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করব। বিদ্যাসাগর এটাই শিখিয়ে গিয়েছেন।’’ সুরঞ্জনবাবুর মতে, বিদ্যাসাগর ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন