সাংবাদিকদের মুখোমুখি মহম্মদ মনিরুল শেখ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
প্রধানমন্ত্রীর নাম না বলতে পারায় ট্রেনে আক্রান্ত হয়েছিলেন মালদহের কালিয়াচকের মহম্মদ মনিরুল শেখ ওরফে জামাল মোমিন। ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১৪ মে। তার দশ দিন পরে অর্থাৎ গত ২৪ মে কালিয়াচক থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও এখন পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে দাবি বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের।
শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে মনিরুলকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের প্রতিনিধিরা। সেখানে মনিরুল বলেন, ‘‘আমায় যারা মারধর করেছে। তাদের শাস্তি চাই।’’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘‘আমি বলেছিলাম মমতাকে (বন্দ্যোপাধ্যায়) ভোট দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নাম বলতে পারিনি। তাই মেরেছিল।’’ মারধরের ঘটনা তো ১৪ মে ঘটেছিল। কেন এত দিন পরে অভিযোগ করলেন তিনি, জবাবে আক্রান্ত যুবক বক্তব্য, ‘‘ভয় পেয়েছিলাম। তাই সেই সময়ে অভিযোগ করিনি।’’ আক্রান্তের পাশে বসে সংস্কৃতি মঞ্চের সভাপতি সামিরুল ইসলামের অভিযোগ, ‘‘২৪ মে অভিযোগ দায়ের পরে আট দিন কেটেছে। কিন্তু এখন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ এমনকি, গত ২৮ মে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে দাবি মঞ্চের নেতৃত্বের।
কালিয়াচক থানা জানিয়েছে, মনিরুলের অভিযোগ হুগলির ব্যান্ডেল রেল পুলিশের (জিআরপি) কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেল পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যান্ডেল জিআরপি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্য সূত্র থেকে দোষীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, কালিয়াচক থানা থেকে আরও কিছু নথি আসার অপেক্ষা করছে রেল পুলিশ। মঞ্চের সভাপতি সামিরুলের বক্তব্য, ‘‘এমন ঘটনায় দোষীরা শাস্তি না পেলে আক্রান্তেরা ভয় পাবেন। কয়েক দিন দেখার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও স্মারকলিপি দেওয়ার বিষয়টি ভাবনাচিন্তা করছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতৃত্ব।
একদা গুজরাতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন মনিরুল। কিন্তু মারধরের ঘটনার পর থেকে ‘আতঙ্কে’ রয়েছেন তিনি। তার পরে মালদহে ফিরে এসেছেন তিনি। শিলিগুড়ির বাসিন্দা উদিত সেনগুপ্তের মালিকাধীন একটি নির্মাণ সামগ্রী সংস্থায় কাজের বিষয়ে কথা হয়েছে মনিরুলের। উদিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘মনিরুলের কাজের বিষয়ে সামিরুলেরা বলেছিল। আমার তিনটি জায়গাতে কাজ চলছে। রায়গঞ্জে একটি প্রকল্পে মনিরুলের কাজের ব্যাপারটি স্থির হচ্ছে।’’