Crime

ছাত্র মৃত্যুতে উঠছে খুনের অভিযোগ

শুক্রবার সকালে তমলুকের শ্রীরামপুর এগ্রিকালচারাল হাইস্কুলে  বন্ধ থাকা হস্টেলের একটি ঘরে সৌরভ গুঁড়ি নামে এক ছাত্রের  ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই অভিভাবক থেকে এলাকাবাসী, অধিকাংশের মনে উঠেতে শুরু করেছে একাধিক প্রশ্ন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৮ ০১:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুলের হস্টেল থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ মিলেছে শুক্রবার। ২৪ ঘণ্টা পরেও সেই মৃত্যু রহস্যের কিনারা হল না। স্পষ্ট হল না ঘটনাটি আত্মহত্যা না অন্য কিছু, আত্মহত্যা হলেই বা তার পিছনে কারণ কী! মৃত ছাত্রের বাবা অবশ্য অভিযোগ করেছেন, তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার সকালে তমলুকের শ্রীরামপুর এগ্রিকালচারাল হাইস্কুলে বন্ধ থাকা হস্টেলের একটি ঘরে সৌরভ গুঁড়ি নামে এক ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই অভিভাবক থেকে এলাকাবাসী, অধিকাংশের মনে উঠেতে শুরু করেছে একাধিক প্রশ্ন। যার মধ্যে একটি হল, বন্ধ হস্টেলের তিনতলার ওই ঘরে পৌঁছল কীভাবে ওই পড়ুয়া? উল্লেখ্য, শুক্রবারের ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগেই ওই স্কুলের ওই হস্টেল থেকেই আরও এক ছাত্রের দেহ একইভাবে উদ্ধার হয়েছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নার শ্যামগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা সৌরভ পঞ্চম শ্রেণি থেকে স্কুলের হস্টেলে থাকত। তবে গত মাস আর এক ছাত্রের আত্মহত্যার জেরে হস্টেল বন্ধ ছিল। শুক্রবার সকালে সৌরভ তাঁর জ্যাঠতুতো ভাই তথা নবম শ্রেণির ছাত্র জয় গুঁড়ির সঙ্গে এক সাইকেলে চেপে স্কুলে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল।

Advertisement

জয় জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পরীক্ষা শুরুর কিছু আগে দু’জনে আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু সকাল ১০টায় পরীক্ষা শেষের পরে জয় সৌরভকে দেখতে না পেয়ে খোঁজ শুরু করে। কয়েকজন সহপাঠীকে নিয়ে তারা স্কুলে সৌরভের পরীক্ষা কক্ষে খোঁজ চালায়। কিন্তু সৌরভের খোঁজ মেলেনি বলে অভিযোগ। এর পরে অফিস থেকে হস্টেলের প্রধান প্রবেশ পথের বন্ধ দরজার চাবি নিয়ে ওই ছাত্রেরা হস্টেলের বিভিন্ন ঘরে খোঁজ করে। তখনই তিনতলার একটি ঘরের সৌরভের দেহ পাওয়া যায়।

দরজা বন্ধ থাকলেও সৌরভ কীভাবে ওপরে গেল, তারই উত্তর মিলছে না। এতেই রহস্য বেড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও ঘটনায় খুনের অভিযোগ করতে শুরু করেছেন। অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নীলিমা প্রামাণিক। তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে যা জানানোর আমি পুলিশকে জানিয়েছি। এর বেশি কোনও মন্তব্য করব না।’’

স্কুলের নিরাপত্তা নিয়েও অভিভাবকেরা প্রশ্ন তুলেছেন। ওই স্কুলের এক পড়ুয়া অভিভাবক সুজন জানা বলেন, ‘‘এক মাস আগেই ওই হস্টেলেই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের খোঁজ নেই। ওই ঘটনার তদন্ত সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই ফের তার সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এর ফলে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা বলে আর কিছু রয়েছে বলে মনে হয় না।’’ আর এক অভিভাবক উমাশঙ্কর সামন্তের অভিযোগ, ‘‘দুই ঘটনার মধ্যে কোনও ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। আমরা চাই যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।’’

পুলিশ অবশ্য ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। তারা জানিয়েছে, ওই ছাত্রের ব্যাগ থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে। যাতে সৌরভ এবং গত মাসের মৃত ছাত্রটির ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ রয়েছে। ফলে বন্ধু বিচ্ছেদে শোকতপ্ত হয়ে আত্মঘাতী হওয়ার তত্ত্বটিও উঠেছে।

সৌরভের বাবা তারাপদ গুড়ি অবশ্য বলেন, ‘‘ছেলে বাড়ি থেকে স্কুলে পরীক্ষা দিতে গেল। কিন্তু আর ফিরল না। আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। আমি দোষীদের শাস্তি চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন