Nabanna

ট্যাব: দু’বার টাকা পেলে অর্ধেক ফেরতের বার্তা

নবান্ন সূত্রের খবর, গত বছর ট্যাব কেনার টাকা যে অন্তত সাড়ে ১৬ হাজার পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে দু’বার জমা পড়েছিল, তার মূলে ছিল প্রশাসনিক সমন্বয়ের অভাব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৩০
Share:

অর্থাভাবের মধ্যে আদৌ ট্যাব বিলি করা হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্ন ও বিতর্ক অবশ্য রয়েই গিয়েছে। প্রতীকী ছবি।

রাজ্য সরকারের টানাটানির সংসারে গত বার কমবেশি সাড়ে ১৬ হাজার পড়ুয়ার কাছে ট্যাবের টাকা দু’বার পৌঁছলেও এক বারের টাকা ফেরত পাওয়া গিয়েছিল কি না, কেউ সেই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে তো পারছেই না। বরং সেটা ট্যাব-বিতর্কে নতুন ইন্ধনের কাজ করেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের প্রকল্প ‘তরুণের স্বপ্ন’ ঘিরে ফের যাতে একই ধরনের ‘দুঃস্বপ্নের বিতর্ক’ দানা বাঁধতে না-পারে, সেই জন্য স্কুলগুলিকে এ বার আগাম সতর্ক করে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছে নবান্ন।

Advertisement

সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের অ্যানড্রয়েড ফোন বা ট্যাব কিনতে তাদের অ্যাকাউন্টে সরকারের তরফে মাথাপিছু যে-দশ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে, তা ‘ভুলক্রমে’ দু’বার (অর্থাৎ ২০ হাজার টাকা) পাঠানো হলে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়া যেন দশ হাজার টাকা ফেরত দেয়। এ ব্যাপারে নজরদারির দায়দায়িত্ব চেপেছে স্কুল-কর্তৃপক্ষের ঘাড়েই।

নবান্ন সূত্রের খবর, গত বছর ট্যাব কেনার টাকা যে অন্তত সাড়ে ১৬ হাজার পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে দু’বার জমা পড়েছিল, তার মূলে ছিল প্রশাসনিক সমন্বয়ের অভাব। পরে সেই সব ছাত্রছাত্রীকে চিহ্নিত করা গেলেও সেই বাড়তি টাকা সরকারের ঘরে ফেরত এসেছিল কি না, তা স্পষ্ট নয় বলেই জানাচ্ছে নবান্ন। এমন বেহিসেবি কাণ্ডের কারণ জানিয়ে প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘অনেক পড়ুয়াই ট্যাব চেয়ে ‘বাংলার শিক্ষা পোর্টালে’ এবং সংশ্লিষ্ট স্কুলেরই বৃত্তিমূলক শিক্ষা কেন্দ্রের পোর্টালে একই সঙ্গে নাম নথিভুক্ত করিয়েছিল। ফলে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই টাকা পৌঁছে গিয়েছিল দু’বার।’’

Advertisement

বৃত্তিশিক্ষার শিক্ষক-প্রশিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি বিনিময় দাস বলেন, ‘‘গত বছর একটা বিভ্রাট হয়েছিল। এ বার শিক্ষা দফতর এবং আমরা সতর্ক আছি। একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না বলেই মনে হয়।’’ গত বছর অনেক পড়ুয়া ট্যাবের টাকা দু’বার পাওয়ায় বিরোধীদের দাবি ছিল, এই অনিয়মেরও নির্দিষ্ট তদন্ত হওয়া দরকার। শিক্ষা দফতর এবং কারিগরি শিক্ষা বিভাগের কর্তাদের পারস্পরিক দোষারোপের মধ্যেই সেই বিতর্ক এক সময় থিতিয়ে গিয়েছিল।

অর্থাভাবের মধ্যে আদৌ ট্যাব বিলি করা হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্ন ও বিতর্ক অবশ্য রয়েই গিয়েছে। রাজ্য কমর্চারী ফেডারেশনের প্রবীণ নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘করোনাকাল অতিক্রান্ত। স্কুলে পঠনপাঠন শুরু হওয়ার পাশাপাশি পরীক্ষাও হচ্ছে অফলাইনে। রাজ্যের কোষাগারেরও যে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর হাল, তা নিজেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন ট্যাব কেনার অনুদান দেওয়ার মানে কী?’’ বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোট আসছে। ট্যাব বিলিয়ে পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকদের মন পাওয়াই এখন সরকারের লক্ষ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন