Nabanna

ভোটের মুখে গ্রামেরাস্তা সারাইয়ে জোর

নির্ধারিত সূচি মেনে এগোলে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা এপ্রিল-মে মাসে। সে-ক্ষেত্রে ভোটের আগে হাতে থাকবে কমবেশি দু’টি মাস। এখনও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করা বাকি।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:২৭
Share:

নির্ধারিত সূচি মেনে এগোলে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা এপ্রিল-মে মাসে। ফাইল চিত্র।

উদ্দেশ্য মূলত দু’টি বলে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শিবিরের পর্যবেক্ষণ। প্রথমত, পড়ে থাকা টাকার সদ্ব্যবহার। দ্বিতীয়ত, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে গ্রামাঞ্চলে রাস্তাঘাট-সহ বিভিন্ন বিষয়ে অপ্রাপ্তির ক্ষোভে উপশমের প্রলেপ দেওয়া। মূলত যে-সব বিষয়ে গ্রামবাসীদের অভিযোগ বেশি, খারাপ রাস্তা তার অন্যতম। ‘দিদির দূত’ হিসেবে গ্রামেগঞ্জে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে সেটা বিলক্ষণ মালুম হচ্ছে মন্ত্রী-বিধায়কদের। শহরের পাশাপাশি বেহাল রাস্তা নিয়ে গ্রামেও ক্ষোভ প্রবল। তাই গ্রামের রাস্তা সারানোর উপরে বাড়তি জোর দিচ্ছে নবান্ন।

Advertisement

নির্ধারিত সূচি মেনে এগোলে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা এপ্রিল-মে মাসে। সে-ক্ষেত্রে ভোটের আগে হাতে থাকবে কমবেশি দু’টি মাস। এখনও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করা বাকি। রাজ্য সরকারের নির্দেশ, সেই পড়ে থাকা টাকারই একটা বড় অংশ খরচ করতে হবে গ্রামীণ সড়ক খাতে।

প্রশ্ন উঠছে, এত দিন পরে এই উদ্যোগ কেন? পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাস্তা সারানোর কাজ শুরুর ব্যাপারটা যাতে সাধারণ মানুষের চোখে পড়ে, সেই জন্যই কি এখন প্রশাসনের এই তৎপরতা? প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, সরকারের নিজস্ব সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, গ্রামীণ এলাকার চাহিদার শীর্ষে রয়েছে রাস্তা। দীর্ঘ কাল ধরে থমকে রয়েছে একশো দিনের কাজ প্রকল্প। প্রস্তুতি শেষ হলেও কেন্দ্র টাকা না-দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির কাজও শুরু করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় মানুষের রাস্তার চাহিদাকে আমল না-দিলে অসন্তোষ বাড়তে পারে। তাই ভোটের আগে রাস্তার কাজে বাড়তি জোর।

Advertisement

প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে নবান্নের নির্দেশ, অর্থ কমিশনের অর্থের যে-অংশটি ‘আন-টায়েড’ অর্থাৎ নির্ধারিত নয়, রাস্তা খাতে সেই তারই ৫০% টাকা খরচ করতে হবে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, চলতি বছরে অনির্ধারিত খাতে রাজ্য সরকারের হাতে রয়েছে অর্থ কমিশনের পাঠানো প্রায় ৯১৯ কোটি টাকা। তার অর্ধেক, প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা রাস্তা তৈরি ও সংস্কারে খরচ করতে বলছে নবান্ন। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মোট ৪৮৪৮.৪২ কোটি টাকা রাজ্য সরকারের হাতে রয়েছে। তার মধ্যে ২৪৪৬.৪৬ কোটি টাকা এখনও খরচ হয়নি। ফলে সেই টাকা খরচ করে ফেলার তাগিদ রয়েছে এমনিতেই।

এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, “গ্রামীণ এলাকায় রাস্তা তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অর্থ রয়েছে। এ বছর তাতে ৫৮৫ কোটি টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। তার মধ্যে রাজ্যের ভাগ কমবেশি ২৪২ কোটি। এতে রাজ্যে ১৪৪টি গ্রামীণ সড়ক তৈরির কথা আছে। ফলে অর্থ কমিশনের অর্থে প্রধানত খারাপ রাস্তার সংস্কার হতে পারে। প্রায় ৪৫০ কোটি টাকায় অনেক রাস্তার কাজ করা যাবে। ফলে কাজের সংখ্যা হবে চোখে পড়ার মতো।”

সময়সীমা বেঁধে কাজের তালিকা চূড়ান্ত করার নির্দেশও দিয়েছে নবান্ন। আধিকারিকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার আগে সব কাজের টেন্ডার বা দরপত্রের প্রক্রিয়া সেরে বরাত দেওয়ার কাজ চূড়ান্ত করে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তাতে নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে গেলেও কাজ থমকে যাবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন