বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়ার পরে দার্জিলিং পাহাড়ের পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন জেলা এবং সশস্ত্র ব্যাটেলিয়ন থেকে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এ ভাবে জো়ড়াতালি দিয়ে বড় ধরনের গোলমাল ঠেকানো সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা।
অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মোকাবিলায় তাই এ বার র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র্যাফ) তৈরি করছে নবান্ন। উন্মত্ত জনতাকে ঠেকাতে তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রের বদলে থাকবে লাঠি, ঢাল, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান এবং রবার বুলেট ছোড়ার বন্দুক। এর ফলে গোলমালের সময়ে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে, এমন অভিযোগও ঠেকানো সম্ভব হবে বলে নবান্নের দাবি। আগামী পঞ্চায়েত ভোট থেকেই এই বাহিনীকে কাজে লাগানো হতে পারে। এই বাহিনীর নিয়ন্ত্রক কর্তা হবেন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)।
রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘নয়া বাহিনী হবে কলকাতা পুলিশের র্যাপি়ড অ্যাকশন ফোর্স (র্যাফ)-এর মতোই।’’ কলকাতা পুলিশের মতো সিআরপি-র র্যাফ রয়েছে। প্রত্যেকেরই উর্দি নীল, সাদা জংলা ছোপ। রাজ্য পুলিশের র্যাফের উর্দি হবে একই। পুলিশের একাংশ মনে করছে, শুধু পাহাড় নয়, বসিরহাট, উত্তর দিনাজপুরে গোষ্ঠী-সংঘর্ষের ঘটনাও এই বাহিনী তৈরির অন্যতম কারণ। অনেক ক্ষেত্রে জেলা পুলিশ লাইন বা থানার কর্মীরা উন্মত্ত জনতাকে বাগে আনতে সক্ষম হন না। নতুন বাহিনী সেটা পারবে।
এখন বিভিন্ন জেলায় পুলিশ সুপারের অধীনে কমব্যাট ফোর্স রয়েছে। তবে সেগুলো কতটা দক্ষ, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পুলিশকর্তারা জানান, জেলার এসপি-রা তাঁদের অধীনে থাকা সশস্ত্র পুলিশ থেকে কমবয়সি এবং শক্তপোক্ত চেহারার জওয়ানদের নিয়ে একটি করে কোম্পানি তৈরি করেন। গোলমাল বাধলে কালো পোশাক পরা সেই বাহিনীকেই নামানো হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না-থাকায় ওই জওয়ানেরা অনেক সময়েই গোলমাল পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন না।
নবান্নের খবর, রাজ্যে নতুন বিশেষ বাহিনীর তিনটি ব্যাটেলিয়ন তৈরি হচ্ছে। মোতায়েন করা হবে শিলিগু়ড়ি, ব্যারাকপুর ও দুর্গাপুরে। মূলত রাজ্যের হাতে থাকা দু’টি ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটেলিয়ন এবং রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের অষ্টম ব্যাটেলিয়নকে এই নতুন বাহিনীতে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে হাজার দুয়েক পুলিশকর্মী বাহিনীতে থাকবেন।