Land Tribunal

রাজভবনের ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে নবান্ন! জমি ট্রাইবুনাল বিল পাশ নিয়ে অভিযোগ বিজেপির

গত সোমবার বিধানসভার অধিবেশন থেকে চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করেন স্পিকার। তার প্রতিবাদে মঙ্গলবার গোটা অধিবেশন বয়কট করে বিজেপি পরিষদীয় দল। তাই এই বিল নিয়ে আলোচনায় অংশ নেননি বিজেপির কোনও বিধায়ক।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৫ ১৫:২৫
Share:

(বাঁ দিকে) সিভি আনন্দ বোস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।

রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজভবনের ক্ষমতার উপর হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলল বিজেপি। ২৪ জুন বিধানসভা অধিবেশনের শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে থাকা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে একটি সংশোধনী বিল পাশ হয়েছে। বিরোধীশূন্য বিধানসভায় বিলটি পাশ হওয়ার পর বিজেপি পরিষদীয় দল অভিযোগ করেছে, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধানের জন্য রাজ্যপালের হাতে যে ক্ষমতা ছিল তা কেড়ে নিয়েছে রাজ্য সরকার। গত সোমবার সকালে বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে কার্যবিবরণী কমিটির বৈঠক বসে। অধিবেশন শেষ হওয়ার আগের দিন ঠিক হয় ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ল্যান্ড রিফর্মেশন এন্ড টিনান্সি ট্রাইবুনাল (আমেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৫’ আনা হবে। সেইমতো অধিবেশনের শেষ দিনের দ্বিতীয়ার্ধে বিলটি পাশ হয়।

Advertisement

গত সোমবার বিধানসভার অধিবেশন থেকে চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করেন স্পিকার। তার প্রতিবাদে মঙ্গলবার গোটা অধিবেশন বয়কট করে বিজেপি পরিষদীয় দল। তাই এই বিল নিয়ে আলোচনায় অংশ নেননি বিজেপির কোনও বিধায়ক। ভূমি দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিলটি বিধানসভায় পেশ করেন। বিজেপি পরিষদীয় দলের অভিযোগ, এত দিন জমি ট্রাইবুনালে সদস্য নিয়োগ করার ক্ষমতা ছিল রাজ্যপালের হাতে। কিন্তু এই সংশোধনী বিলটি পাশ করে সেই ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিয়েছে রাজ্য সরকার।‌ অভিযোগের সুরে আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের সমগ্র ভূমি কৌশলে তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ ভূমি মাফিয়ারা দখল করে নিচ্ছে, বা তৃণমূল নেতাদের আশীর্বাদে সেই দখলদারি চলছে। পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল পাওয়া যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষ ট্রাইব্যুনালে ন্যায়ের আশায় যাচ্ছেন। এখন সেই সুযোগটাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন জমি সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে মানুষ যাবে কোথায়? তিন সদস্যের যে দল গঠিত হয়েছে, তার মধ্যে দু’জনই সরকার পক্ষের— তা হলে ন্যায়বিচার কোথা থেকে আসবে? এই বিল পাশ হওয়ার ফলে ন্যায় পাওয়ার স্বচ্ছতা অনেকটাই হারিয়ে যাবে।”

বিজেপি বিধায়কের এমন অভিযোগ মানতে চাননি লালগোলার তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আলি। এই বিল নিয়ে যিনি বিধানসভার অধিবেশনে বিস্তারিত বক্তৃতা করেছিলেন। তিনি বলছেন, ‘‘বিজেপি পরিষদীয় দলের তোলা অভিযোগ কোনও ভাবেই ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে সংশোধনী বিলটি পাশ করিয়ে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে।’’ আইন সংশোধন করে ট্রাইব্যুনালে নিয়োগ হওয়া সদস্যদের বাছাই করার দায়িত্ব রাজ্য সরকার নিজের হাতে নিয়েছে। এই সংশোধনী বিল কার্যকর হলে ট্রাইব্যুনালে সদস্য নিয়োগের কোনও ক্ষমতা আর রাজ্যপালের কাছে থাকবে না। বিল পাশ করে রাজ্য সরকার রাজভবনের ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিতে চাইলেও তা কত দূর সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে প্রশাসনিক মহলে। কারণ, বিলটি বিধানসভায় নির্দ্বিধায় পাশ হয়ে গেলেও, তা পাঠানো হয়েছে রাজভবনে। বিলটি খতিয়ে দেখার পর সেই বিলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আদৌ সম্মতি দেবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে নবান্নের অন্দরের আধিকারিকদের একাংশের মধ্যে। কারণ, যে বিলে রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সংশোধনী বিলে কি আদৌ সম্মতি দেবেন বোস?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement