খোঁজ: ছাই ঘেঁটে বইয়ের খোঁজ। নওদায়। ছবি: সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সুমন মণ্ডল সোমবার কী নিয়ে স্কুলে যাবে ভেবে পাচ্ছে না। তার সব বইপত্র আগুনে পুড়ে গিয়েছে।
চতুর্থ শ্রেণির সুমনা আবার বইগুলো বাঁচাতে পেরেছে। কিন্তু আগুনে পুড়ে গিয়েছে স্কুলের পোশাক। এমনিতেই চাষিরা পেঁয়াজের ঠিক মতো দাম পাচ্ছেন না। তার মধ্যে প্রদ্যোৎ মণ্ডলের মাঠ থেকে কেটে আনা ২৫ কুইন্টাল পেঁয়াজ পুড়ে গিয়েছে। বহু কষ্টে পাওয়া আধার কার্ডটাও পুড়ে ছাই।
রবিবার সকালে নওদার এলিয়েটনগরে ভস্মীভূত হয়ে গেল তিনটি বাড়ি। আগুন নেভাতে গিয়ে জখম হয়েছেন দু’জন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অভিযোগ, ঘটনার কথা জানানো হলেও স্থানীয় পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের কোনও কর্তা ঘটনাস্থলে আসেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে রাজকুমার মণ্ডলের বাড়িতে রান্না হচ্ছিল। সেখান থেকেই কোনও ভাবে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। পুড়ে যায় পাশের আরও দু’টি বাড়ি, তিনটি বড় গাছ, খড়ের গাদা, বিদ্যুতের তার। আগুন নেভাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন দুলাল মণ্ডল ও তাঁর পুত্রবধূ সোনালি মণ্ডল। এলাকার লোকজন পাশের ভাণ্ডারদহ বিল থেকে জল এনে আগুন নেভান।
সোনালীদেবী বলেন, ‘‘টাকা ধার করে পেঁয়াজ চাষ করেছিল আমার স্বামী। বর্তমানে তার দামও নেই। তাই ভেবেছিলাম, এখন বিক্রি করব না। পরে ভাল দাম পেলে বিক্রি করব। কিন্তু সে সবও পুড়ে গেল।’’ তাঁর স্বামী প্রদ্যোৎ মণ্ডলের কথায়, ‘‘ফসল বিক্রির নগদ কয়েক হাজার টাকা, ছেলেই বই, আধার কার্ড সব পুড়ে গিয়েছে। এ বার কী করব জানি না।’’
ঝাউবোনা হাই স্কুলের ছাত্র সুমন মণ্ডলের কথায়, ‘‘সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি বাড়িতে আগুন লেগেছে। সব বই চোখের সামনে পুড়ে গেল। কিচ্ছু করতে পারলাম না। কী নিয়ে এখন স্কুলে যাব বুঝতে পারছি না।’’
নওদার বিধায়ক কংগ্রেসের আবুতাহের খান বলেন, ‘‘আমি ঘটনার কথা শুনেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদনের ভিত্তিতে সব রকমের সাহায্য করা হবে। সরকারি ভাবে এককালীন ক্ষতিপুরণও যাতে পায় সে ব্যবস্থাও করা হবে।’’