চাকরি দিয়েও বরখাস্ত, বিতর্কে বিশ্ববিদ্যালয়

তাঁরা ‘নিয়ম’ মেনেই চাকরির আবেদন করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় ‘নিয়ম’ মেনেই নিয়োগ করেছিল তাঁদের। অথচ প্রায় এক বছর চাকরি করার পরে দুই শিক্ষককে বরখাস্তের চিঠি ধরাল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

কল্যাণী  শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৮
Share:

তাঁরা ‘নিয়ম’ মেনেই চাকরির আবেদন করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় ‘নিয়ম’ মেনেই নিয়োগ করেছিল তাঁদের। অথচ প্রায় এক বছর চাকরি করার পরে দুই শিক্ষককে বরখাস্তের চিঠি ধরাল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়।

Advertisement

বছর দেড়েক আগে ইতিহাস এবং ম্যানেজমেন্ট বিভাগে দু’জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়েছিল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। দু’টি পদই তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। যাঁরা আবেদন করেছিলেন, ইন্টারভিউয়ে তাঁদের মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন ভিন্ রাজ্যের দুই প্রার্থী। ইতিহাস বিভাগে মলসন ডংলিয়ানা এবং ম্যানেজমেন্ট বিভাগে থিরু চিরাপল্লিকে নিয়োগ করা হয়।

বুধবার ওই দু’জনকেই চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নিয়োগের শর্ত পূরণ না করতে পারার জন্য তাঁদের বরখাস্ত করা হল। কোন শর্ত? রেজিস্ট্রার সুভাষ সরকারের ব্যাখ্যা, তফসিলি জাতিভুক্ত হিসেবে ওঁরা নিজের রাজ্যে সংরক্ষণের সুবিধা পেতে পারেন, কিন্তু এ রাজ্যে চাকরির জন্য তাঁদের শংসাপত্র কার্যকরী নয়। তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল কেন? সুভাষবাবু বলেন, ‘‘এটা তদানীন্তন কর্তৃপক্ষ করেছিলে‌ন।’’ সেই সময়ে উপাচার্য পদে ছিলেন রতনলাল হাংলু। তিনি ও অন্য পদাধিকারীদের অনেকে আর দায়িত্বে নেই। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘ওই নিয়োগ নিয়ে আমার কিছু বলা ঠিক হবে না।’’

Advertisement

মাস কয়েক আগে হালিশহরের একটি সংগঠন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরে অভিযোগ করেছিল, ওই দুই শিক্ষক যে ‘জাতি’র লোক হিসেবে চাকরি পেয়েছেন, এ রাজ্যে চাকরির ক্ষেত্রে তা গ্রহণযোগ্য নয়। ওই দফতর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বিষয়টি জানতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, বিষয়টি তাঁদের চোখ এড়িয়ে গিয়েছে। বিষয়টি বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁরা। রাজ্য সরকার তা খারিজ করে দেয়। গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকরী সমিতির বৈঠকে ওই দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বুধবার চিঠি পাওয়ার পর কার্যত মাথায় বাজ পড়ে দুই শিক্ষকের। এ ক্ষেত্রে যে তাঁদের কোনও গাফিলতি নেই, অন্য শিক্ষকেরাও সে বিষয়ে একমত। থিরু চিরাপল্লি এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। মলসন শুধু বলেন, ‘‘দিশেহারা লাগছে। বুঝতে পারছি না, কী করব।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুলের খেসারত কেন দুই শিক্ষককে দিতে হল? প্রশ্ন শুনেই উপাচার্য মলয়েন্দু সাহা ‘মিটিংয়ে ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দেন। তার পর তিন বার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এসএমএস-এরও জবাব দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন