অধীর গড়ে ভাঙন চলছেই

কংগ্রেসের রক্তক্ষরণ অব্যাহত। রবিবার কংগ্রেসের দখলে থাকা কান্দি ব্লকের দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির মোট ২৩ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কান্দি ও রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৩৯
Share:

চলছে সভা। —নিজস্ব চিত্র

কংগ্রেসের রক্তক্ষরণ অব্যাহত।

Advertisement

রবিবার কংগ্রেসের দখলে থাকা কান্দি ব্লকের দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির মোট ২৩ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দিলেন। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম সরকারের নেতৃত্বে এ দিন তাঁরা বহরমপুরে গিয়ে দলবদল করেছেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে বেশ কয়েকবার কলকাতায় গিয়ে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী, প্রদেশ যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পার্থবাবু বৈঠক করেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।

মাস খানেক আগেও বামেদের দখলে ছিল বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতি। কংগ্রেসের দখলে ছিল ভরতপুর ১ নম্বর প়ঞ্চায়েত সমিতি। কিন্তু একে একে তা দখল করে তৃণমূল। কিন্তু কান্দি, খড়গ্রাম ও ভরতপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল থাবা বসাতে পারেনি। কিন্তু রবিবার কংগ্রেসের দখলে থাকা সেই কান্দি পঞ্চায়েত সমিতিও নিজেদের দখলে আনল তৃণমূল।

Advertisement

কেন এই দলবদল?

পার্থপ্রতিমের দাবি, ‘‘বিরোধী দলে থেকে এলাকার উন্নয়ন করা যাচ্ছিল না। তাই এই দলবদল।’’ যদিও কংগ্রেস নেতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, সম্প্রতি বড়ঞার নন্দিবাণেশ্বরে একটি স্কুলের পরিচালন সমিতির নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের দিন বোমা ও গুলি চলে। সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পার্থবাবু। সেই ঘটনায় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দায়ের করা হয়। বাদ যাননি পার্থবাবুও। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলা দায়ের হয়। এরপরই তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সঙ্গে অন্যদেরও তিনি দলবদলের ব্যাপারে রাজি করান।

তবে দাদা পার্থপ্রতিম তৃণমূলে যোগ দিলেও কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার (ডেভি়ড) এখনও কংগ্রেসেই আছেন। যদিও সদ্য কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কয়েক জন নেতার কথায়, ‘‘ডেভিডদার কিছু দাবি ছিল। তৃণমূল তা মেনে নিয়েছে। তাই দাদার দলবদল শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’

রঘুনাথগঞ্জের একটি কর্মিসভায় জেলা তৃণমূলের সভাপতি মান্নান হোসেনও এ দিন দাবি করেন, ‘‘ডেভিডের সঙ্গে কথা হয়েছে। খুব শিগ্‌গির ডেভিড-সহ জেলার আরও দুই কংগ্রেস বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেবেন। কথা হয়েছে তাঁদের সঙ্গেও।”

যদিও ডেভিড এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের কোনও নেতার সঙ্গে আমার কথা হয়নি। তেমন হলে ঘোষণা করেই দল ছাড়ব। আর আমার দাদার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ঘটনা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।”

এ দিন রঘুনাথগঞ্জে ওই কর্মিসভার ডাক দিয়েছিলেন সদ্য কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মহম্মদ সোহরাব। সেই সভাতেও সোহরাবের বেশ কয়েকজন অনুগত কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেন। এ দিনের সভায় আসার কথা ছিল শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়ের। কিন্তু তাঁরা কেউই আসেননি। জঙ্গিপুরের কংগ্রেস নেতাদের দাবি, “শুভেন্দু ও মুকুল রায় সভায় অনুপস্থিত থেকে বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলে মহম্মদ সোহরাবকে তাঁরা কতটা উপেক্ষার চোখে দেখেন।” যদিও তৃণমূল সূত্রে খবর, বিশেষ অসুবিধার কারণেই ওই দুই নেতা আসতে পারেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন