তেইশ কালীর পুজো ঋষিপুরে

সমস্বরে মন্ত্রোচ্চারণ করে চলেছেন ২৩ পুরোহিত। বাইরে তখন অঝোরে বৃষ্টি। মণ্ডপে তবু তিল ধারণের জায়গা নেই। বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজির হয়েছেন হাজার হাজার ভক্ত, দর্শনার্থী। ভক্তিতে কারও মাথা আনত। কেউ বা করজোড়ে চোখ মুদে নিজের মিনতি রাখছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডোমকল শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:১০
Share:

ইসলামপুরের ঋষিপুরে তেইশ কালীর পুজো।  নিজস্ব চিত্র

সমস্বরে মন্ত্রোচ্চারণ করে চলেছেন ২৩ পুরোহিত। বাইরে তখন অঝোরে বৃষ্টি। মণ্ডপে তবু তিল ধারণের জায়গা নেই। বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজির হয়েছেন হাজার হাজার ভক্ত, দর্শনার্থী। ভক্তিতে কারও মাথা আনত। কেউ বা করজোড়ে চোখ মুদে নিজের মিনতি রাখছেন।

Advertisement

ইসলামপুরের ঋষিপুর গ্রামে এ বারে একই সঙ্গে ২৩ কালীর পুজোর আয়োজন করা হয়। এক বড় প্রতিমার পাশে সার দিয়ে সাজানো ২২টি কালী প্রতিমা। প্রতিটি প্রতিমার সামনে একজন করে পুরোহিত। তাঁদের কেউ এসেছেন বহরমপুর থেকে, কেউ নদিয়ার করিমপুর থেকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই ভিড় জমছিল মণ্ডপে। রাত যত বেড়েছে ঢল নেমেছে দর্শনার্থী, ভক্তদের।

ঋষিপুরের এই পুজো নিয়ে নানা গল্প শোনা যায়। জনশ্রুতি, প্রায় ৪০০ বছর আগে ডাকাতদের আড্ডা ছিল বিল লাগোয়া জঙ্গল। সেই জঙ্গলেই ছিল কালী মন্দির। মানুষজনের নজরে আসতেই পুজো শুরু হয়।

Advertisement

স্থানীয়দের বিশ্বাস, ওই কালীর কাছে মানত করে কেউ খালি হাতে ফেরেননি। যাঁদের মনের ইচ্ছেপূরণ হয়েছে তাঁরাই এক একটি পুজোর ব্যবস্থা করেছেন।

পুজো কমিটির সহ সম্পাদক দিলীপ সরকার বলেন, ‘‘এখানে অনেক প্রতিকূলতা আছে। যাতায়াতের তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই, রাস্তাও খারাপ। তার পরেও হাজার হাজার মানুষ ভিন্ জেলা থেকে এসে ভিড় জমান।’’ তাঁরাও দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের সাধ্য মতো থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেন— দাবি দিলীপের।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামপুর থেকে মণ্ডপে গিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অশীতিপর সোলেমান হক। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক গল্পগাথা শুনেছি এই পুজোকে ঘিরে। এখানে না এলে মানুষের ভক্তি এবং আবেগের টের পাওয়া যাওয়া যায় না। তাতে সামিল হতে ১০ কিমি উজিয়ে আমিও এখানে এসেছি।’’

জেলার বেলডাঙা, বহরমপুর, কান্দির পাশাপাশি পড়শি জেলা নদিয়া, বর্ধমান থেকেও এসেছেন অনেকে। বেলডাঙার অপর্ণা ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘মানত করে ফল পেয়েছি। তাই ফের এসেছি।’’

পুরোহিত হয়ে এসেছেন নদিয়ার তাপস চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁদের কথায়, ‘‘মানত করে মনস্কামনা পূরণ হলে অনেকে কালী পুজো করেন। এমন করেই প্রতিমার সংখ্যা বেড়ে যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন