West Bengal SSC Scam

একই স্কুলের ৩৬ শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে সোমবারের রায়ে! পড়াশোনা কী ভাবে হবে, উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা

এসএসসি মামলার রায়ে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে হাই কোর্ট। ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি গিয়েছে। ওই বাতিল হওয়া প্যানেলে রয়েছে ফরাক্কা ব্লকের অর্জুনপুর হাই স্কুলের ৩৬ জনের নাম।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩৮
Share:

অর্জুনপুর হাই স্কুল। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। সেই অনুপাতে শিক্ষক বেশি না থাকলেও পার্শ্বশিক্ষকদের সহায়তায় ৬০ জন স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকাকে নিয়ে ভালই চলছিল স্কুল। কিন্তু সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে রায়ে চাকরিহারা হলেন ওই স্কুলের ৩৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। একসঙ্গে এত শিক্ষকের চাকরি যাওয়ায় পঠনপাঠন নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন কর্তৃপক্ষ থেকে পড়ুয়ারা।

Advertisement

এসএসসি মামলার রায়ে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি গিয়েছে। ওই বাতিল হওয়া প্যানেলে রয়েছে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ব্লকের অর্জুনপুর হাই স্কুলের ৩৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার নাম। সোমবার আদালতের নির্দেশের পর এই স্কুলের পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। মঙ্গলবার স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষকের কথায়, “প্রায় ১০ হাজারের মতো পড়ুয়া। এক সঙ্গে এত জন শিক্ষকের চাকরি প্রশ্নের মুখে পড়লে স্কুল চলবে কী দিয়ে!’’ তিনি জানান, চাকরি যাওয়া ওই ৩৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ২০ জন ওই স্কুলেই যোগদান করেছিলেন। বাকি ১৬ জন বিভিন্ন স্কুল থেকে বদলি হয়ে এসেছিলেন।

ফরাক্কা অর্জুনপুর হাই স্কুলের মোট শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৬০। পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন সাত জন। এক ধাক্কায় ৩৬ জনের চাকরি বাতিল হওয়ায় মোট শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা হল ২৪ জন। কিন্তু মাত্র ২৪ জন স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকাকে দিয়ে কী ভাবে ১০ হাজার পড়ুয়ার পঠনপাঠন হবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা। কপালে চিন্তার ভাঁজ স্কুল কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

আদালতের রায়ে চাকরি হারানো ওই স্কুলের এক শিক্ষক মহম্মদ ইসলাম আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “২০২০ সালে যোগদান করেছিলাম। ‘ট্রান্সফার’ (বদলি) হয়ে এখানে এসেছিলাম। আমার চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে।’’ মহম্মদ ইসলামের দাবি, তিনি নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন। এ ভাবে চাকরি যাওয়া মেনেই নিতে পারছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘যারা অন্যায় করেছে, তাদের চাকরি বাতিল হোক। কিন্তু, আমাদের কী দোষ?”

অন্য প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকেরা। অভিমন্যু মণ্ডল নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘কার চাকরি গেল, আর কার থাকল, সেটা আদালতের বিচার্য বিষয়। কিন্তু, এখন স্কুল যে লাটে উঠছে, তার দায় কে নেবে? কী ভাবে আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা চলবে?’’ সিলেবাস নিয়ে চিন্তায় ফরাক্কার ওই স্কুলের পড়ুয়ারাও। এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুমন শেখ যেমন বলছে, ‘‘এক সঙ্গে এত জন মাস্টারমশাই স্কুল থেকে চলে গেলে আমাদের ক্লাস কে নেবে? সামনে তো মাধ্যমিক। সিলেবাসই শেষ না হলে পরীক্ষা দেব কী করে?’’ প্রশ্ন করছেন সবাই। কিন্তু উত্তর অজানা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন