পুরনো আক্রোশ থেকেই খুনের চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।
জমি নিয়ে বিবাদের জেরে এক পরিবারের চার জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর ঘটনা ঘটল নদিয়ার শান্তিপুরে। গোপালপুরের এই ঘটনার পর গুরুতর জখম অবস্থায় এক দম্পতি এবং তাঁদের দুই ছেলেকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁদেরকে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
রবিবার শান্তিপুর থানায় গোপালপুরের বাসিন্দা কালু শেখ-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, জমি বিক্রি করা নিয়ে কালুর সঙ্গে আতিয়ারের পরিবারের বিবাদ চলছিল। সেই পুরনো আক্রোশ থেকেই ওই হামলা বলে তাঁদের অভিযোগ। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।
হামলায় গুরুতর জখম হন আতিয়ার রহমান, তাঁর বড় ছেলে মাসুদ আলি, মেজ ছেলে মামুদ আলি। বাধা দিতে গেলে আতিয়ারের স্ত্রী শাহানারা বেগমকেও কোপায় দুষ্কৃতীরা। তাঁর কাঁধে গুরুতর আঘাত লাগে। ঘটনার পর বিশাল পুলিশবাহিনী যায় ঘটনাস্থলে।
শান্তিপুর পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুরের বাসিন্দা আতিয়ার রহমান। তাঁর পরিবারের সঙ্গে এলাকার এক বাসিন্দার একটি জমি ঘিরে বিবাদ চলছিল দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে। বাড়ির কাছের সেই জমি কয়েক বছর আগে কিনতে চেয়েছিলেন এলাকার এক বাসিন্দা। জমি বিক্রি নিয়ে উভয় পক্ষের কথাবার্তাও হয়। কিন্তু এর পর আর জমিটি বিক্রি হয়নি। আর এই জমি বিক্রি নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে চলছিল বিবাদ।
এর আগেও আতিয়ারের পরিবারের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আতিয়ার রহমানের ছেলেদের পাওয়ারলুম রয়েছে। তাঁরা কাপড়ের ব্যবসা করেন। রবিবার আতিয়ারের পরিবার জমিটি মাপতে যায়। সেই সময়েই আতিয়ার ও তাঁর ছেলেদের উপরে হামলা হয়। আক্রান্তদের বয়ান অনুসারে, ধারালো অস্ত্র নিয়ে একদল দুষ্কৃতী তাঁদের উপর আচমকা হামলা চালায়। নৃশংস ভাবে কোপানো হয় তাঁদের। আহতদের আর্তনাদ শুনে আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে এলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। স্থানীয়রাই আহতদের শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। মামুদের হাতের আঙুল এবং শাহানারার কাঁধে ধারালো অস্ত্রের আঘাত গুরুতর। শান্তিপুরে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এ দিন জখম মামুদ আলি বলেন, ‘‘আমরা আমাদের জমি মাপতে গিয়েছিলাম। সেখানে একদল দুষ্কৃতী আমাদের উপরে চড়াও হয়। ওদের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। বড় বড় তলোয়ার নিয়ে হামলা চালায়। আমাদের কোপাতে থাকে। ওরা গুলিও চালিয়েছে।’’
আতিয়ার রহমানের ছোট ছেলে টিপু আলির চোখেমুখে এই ঘটনার আতঙ্ক স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির লোকজন জমি মাপতে গিয়েছিল। সেখানেই ওদেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। আমি কোনওমতে পালিয়ে আসি।’’