arrest

ফিল্মি কায়দায় অপহরণের ছক বানচাল করল পুলিশ, নদিয়ায় ধৃত চার অপহরণকারী

শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত চার জনকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার করে পলাশিপাড়া থানার পুলিশ। অপহৃত যুবককেও উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার ধৃতদের তেহট্ট আদালতে হাজির করানো হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

তেহট্ট শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৩ ২৩:১৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

অপহৃত হয়েছিলেন এক যুবক। তার দু’দিন পর বাড়িতে মুক্তিপণ চেয়ে এল ফোন। সেই মুক্তিপণ নিতে এসে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন চার জন। শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত চার জনকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার করে পলাশিপাড়া থানার পুলিশ। ধৃত চার জনের নাম জুয়েল সরকার, উত্তম সরকার, দিব্যেন্দু হালদার ও ইঞ্জামুল হক। এঁদের মধ্যে জুয়েলের বাড়ি ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পাকুর জেলার মহেশপুর থানা এলাকায়। অপহৃত যুবককেও উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার ধৃতদের তেহট্ট আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, পলাশিপাড়া থানার গোপীনাথপুরের মাঝপাড়া এলাকার বাসিন্দা পেশায় গাড়িচালক ফিরোজ মণ্ডল। চলতি ২২ তারিখে নওদা থানা এলাকার কামদপুরের বাসিন্দা মিলন শেখের সঙ্গে গাড়ি নিয়ে বার হন তিনি। তার পর থেকে তাঁর কোনও খোঁজ মেলছিল না। ২৫ তারিখ ওই যুবকের বাবা জিব্রাইল মণ্ডল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এর মধ্যে ২৭ তারিখ ফিরোজের বাবার মোবাইলে একটি ফোন আসে। সেই ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে ফিরোজের বাবার কাছে দশ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এই কথা তাঁরা পুলিশকে জানান। এর পরেই ফাঁদ পাতে পুলিশ। আবার ২৮ তারিখ সকালে ফোন এলে ফিরোজের বাবা জানিয়ে দেন, দশ লক্ষ টাকা দিতে তিনি পারবেন না। সেই মতো ছয় লক্ষ টাকায় রফা হয়। অপহরণকারীরা তাঁকে ছয় লক্ষ টাকা নিয়ে মুর্শিদাবাদের একটি নির্দিষ্ট স্থানে যেতে বলে। পুলিশ এই কথা জানতে পেরে আগে থেকেই সাদা পোষাকে ওই জায়গায় পৌঁছে যায়। ফিরোজের পরিবারের লোক জন টাকা নিয়ে ওই জায়গায় পৌঁছন। পুলিশ দেখে, একটি গাড়িতে তিন জন ফিরোজকে নিয়ে ওই জায়গায় নামছে। সঙ্গে সঙ্গে চারিদিক থেকে পুলিশ ওই তিন জনকে ঘিরে ফেলে। তাঁরা ফিরোজকে ফেলে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ তাঁদের ধরে ফেলে। সেই সঙ্গে যে গাড়ি করে অপহরণকারীরা এসেছিল, সেই গাড়ির চালককেও পুলিশ গ্রেফতার করে এবং গাড়িটি আটক করে। সেই সঙ্গে অপহৃত যুবককে উদ্ধার করে। শুক্রবার রাতেই তাঁদের পলাশিপাড়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

Advertisement

এই বিষয়ে অপহৃত যুবক ফিরোজ বলেন, ‘‘আমি সকাল নটার দিকে মিলন শেখের সঙ্গে তাঁর চারচাকা গাড়ি নিয়ে বের হই। এর পর আর আমার কিছু মনে নেই। পরে দেখি যে, আমাকে একটা ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। আমার মনে হয় টাকার লোভে মিলন এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’’ জিব্রাইল বলেন, ‘‘আমি ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। এটাই খুব আনন্দের। এই জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই। পুলিশ খুব ভাল কাজ করেছে বলে আমি ছেলেকে ফিরে পেলাম।’’ তেহট্ট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শুভতোস সরকার বলেন, ‘‘আমরা অপহরণকারীদের মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থানার মোড়গ্রাম এলাকা থেকে গ্রেফতার করি এবং অপহৃতকে উদ্ধার করি। অপহরণকারীরা ওই যুবককে ঝাড়খণ্ডে নিয়ে গিয়ে রেখেছিল। পরে তাঁদের ফাঁদ পেতে ধরা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন