লালবাগের সেই হোটেল। নিজস্ব চিত্র
লালবাগের একটি হোটেল থেকে তিন নাবালিকা-সহ পাঁচ মহিলাকে উদ্ধার করল সিআইডি-র স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ। শনিবার বিকেলের ঘটনা। উদ্ধার হওয়া ওই মেয়েদের একজন বাংলাদেশের নাগরিক। বাকিরা দুর্গাপুর, বাগনান, দক্ষিণ বারাসাত ও কাকদ্বীপ এলাকার বাসিন্দা।
সিআইডি সূত্রে খবর, ওই পাঁচ জনকে জোর করে দেহ ব্যবসায় নামানোর অভিযোগে হোটেলের ম্যানেজার-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ, রবিবার ধৃতদের লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হবে। সিআইডি-র এক আধিকারিক জানান, ওই হোটেলের মালিক গোপাল মির্জা পলাতক। গোপাল মুর্শিদাবাদ পুরসভার তৃণমূলের এক কাউন্সিলর মেহেদি আলম মির্জার ভাই।
‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি’র দুর্গাপুর শাখার প্রোগ্রাম ডিরেক্টর নীলকমল মিশ্র বলেন, ‘‘দিন দশেক আগে দুর্গাপুরের এক যৌনকর্মী লালবাগের ওই হোটেলে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁকে আর বাড়ি ফিরতে না দিয়ে হোটেলেই আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁর কাছ থেকে টাকাপয়সাও কেড়ে নেওয়া হয়। তিনি ফোন করে সে কথা তাঁর স্বামীকে জানান।’’
অভিযোগ, ওই মহিলাকে তাঁর স্বামী উদ্ধার করতে লালবাগের হোটেলে গেলে তাঁকে খুনের হুমকি দিয়ে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তিনি ফিরে গিয়ে ‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি’র দুর্গাপুর শাখায় দিন তিনেক আগে গোটা ঘটনাটি জানান। ওই কমিটির সদস্যেরা বিষয়টি কলকাতার কর্তাদের জানান। কলকাতার কেন্দ্রীয় কমিটির কর্তারা রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে জানান।
ধৃত হোটেল ম্যানেজার। নিজস্ব চিত্র।
ডিজি-র নির্দেশে এ দিন সিআইডি লালবাগে আসে। হোটেল ঘিরে ফেলার পর তারা স্থানীয় মুর্শিদাবাদ থানায় খবর দেয়। সিআইডি-র এক কর্তা বলছেন, ‘‘আমরা এসেছিলাম দুর্গাপুরের এক যৌনকর্মীকে উদ্ধার করতে। কিন্তু পেয়ে গেলাম আরও ৪ জনকে।’’ বাংলাদেশের ওই নাবালিকার কথায়, ‘‘কাজ দেওয়ার নাম করে আমার ফুপু (পিসিমা) আমাকে নিয়ে এসেছে। এখানে আমাকে বিক্রি করে দিয়ে সে পালিয়ে গিয়েছে।’’
প্রায় প্রতিদিন ওই মেয়েদের মারধর করা হত ও হোটেল থেকে বের হতে দিত না বলে অভিযোগ। তদন্তকারী এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘একজনকে ২ মাস ধরে আটকে রেখে যৌন ব্যবসা চালাতে বাধ্য করা হয়েছে। কাউকে এক মাস। কিন্তু সেই যৌন ব্যবাসায় পাওয়া টাকা মহিলাদের দেওয়া হয় না। হোটেল মালিক সেই টাকা নিয়ে নেয়।’’
তৃণমূলের কাউন্সিলর মেহেদি আলম মির্জা বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে ভাইয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। তার হোটেলে দেহ ব্যবসা চলে কি না আমি তার কিছুই জানি না।’’