বিয়ে নয়, ওরা পড়তে চেয়েছিল। তাই বাবা-মায়ের মুখের উপরে ওরা বলে বসেছিল, ‘‘এখনই বিয়ে নয়। পড়াশোনা করব। তারপর অন্য কথা।’’
নাবালিকাদের জেদের কাছে হার মানে পরিবার। বন্ধ হয় বিয়ে। সোমবার, শিশু দিবসে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে জেলার সেই পাঁচ জন সাহসিনী, নবগ্রামের জুলেখা খাতুন, হরিহরপাড়ার নুরজাহান খাতুন, সুতির নাজিমা খাতুন, বেলডাঙার গোলাপী খাতুন ও সুমি খাতুনদের কুর্নিশ জানিয়ে তাদের হাতে পুরস্কার ও সম্মানপত্র তুলে দিল জেলা প্রশাসন।
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক এনাউর রহমান (জেলা পরিষদ) বলেন, ‘‘নাবালিকার বিয়ে রুখতে এই পাঁচ জনকে মডেল করে জেলা জুড়ে সচেতনতার প্রচার চালানো হবে।’’
তবে পারিবারিক ও সামাজিক চাপ উপেক্ষা করে বিয়ে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া যে সহজ ছিল না, জেলা প্রশাসনের কর্তাদের উপস্থিতিতে রবীন্দ্রসদন মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই অভিজ্ঞতার কথা শোনান পাঁচ মেয়ে। এমনকী সাহসিকতার জন্য পুরস্কার নিতে বহরমপুরে আসতে দিতেও রাজি ছিলেন না ওই পাঁচ জনের পরিবারের অনেকেই। তাঁদের সকলেই এখন নবম, দশম ও একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া।
তাদের একজন যেমন বলেই ফেলল, ‘‘আমি বহরমপুরে পুরস্কার নিতে আসি, এটা পরিবারের লোকজন কেউ চায়নি। তাঁদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে আমি দিদিকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি।’’ আর একজনের কথায়, ‘‘সাহসিকতার জন্য পুরস্কার পাচ্ছি বলে পরিবারের সকলের খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু আমার পরিবারের কেউ খুশি নয়।
পুরস্কার হাতে রবীন্দ্রসদন মঞ্চে দাঁড়িয়ে ওই পাঁচ মেয়েই সমস্বরে বলেছে, ‘‘পড়াশোনা করে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করবই। একদিন প্রমাণ করে দেব, আমরা সে দিন ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম।’’