একই মেলার দুই আমন্ত্রণ পত্র। ছবি:নিজস্ব চিত্র
দু’দিনের সরকারি কৃষিমেলা। তার শুরুটা কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতিরই নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দিন বেহাত হয়ে গেল। মেলার দখল কার্যত চলে গেল তৃণমূলের হাতে।
সরকারি নিয়মে, মেলা কমিটির সভাপতি হলেন লালগোলা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কংগ্রেসের দীপশিখা হালদার। কমিটির আহ্বায়ক ব্লকের কৃষি দফতরের সহ-অধিকর্তা মানসকুমার ঘোষ। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উদ্বোধক হিসাবে এলাকার সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং অতিথি হিসাবে স্থানীয় দুই বিধায়ক আবু হেনা, আখরুজ্জামান ও জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি শাহানাজ বেগমের নাম ছাপানো হয়। শেষ জন ছাড়া সকলেই তৃণমূলের।
রবিবার দুপুরে লালগোলা ব্লক তৃণমূল সভাপতি শুভরঞ্জন রায়ের নেতৃত্বে দলের জনা চল্লিশেক সমর্থক মানসবাবুর কাছে গিয়ে হাজির হন। তাঁদের দাবি, দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান পঞ্চায়েত সমিতির বদলে ওঁরাই করবেন। দীপশিখার অভিযোগ, ‘‘এই মর্মে কৃষিকর্তাকে দিয়ে জবরদস্তি লিখিয়ে নেন ওঁরা। অশান্তির আশঙ্কা থাকায় আমরা দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান বয়কট করেছি।’’
জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে প্রধান অতিথি, সহ-সভাধিপতিকে বিশেষ অতিথি, সমশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম ও প্রাক্তন বিধায়ক চাঁদ মহম্মদকে অতিথি হিসাবে উল্লেখ করে নতুন আমন্ত্রণপত্র ছাপানো হয়। তাতে তৃণমূলের জেলা সভাপতির ছেলে রাজীব হোসেন এবং শুভরঞ্জন রায়কে ‘সমাজসেবী’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
সোমবার সাংসদ মেলার উদ্বোধন করে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার বিকালে জেলা পরিষদের তৃণমূল সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাসকে দিয়ে ফের ফিতে কাটানোর তোড়জোড় শুরু করেন শুভরঞ্জন-অনুগামীরা। কিন্তু দলেরই কিছু লোক টিপ্পনী কাটেন— ‘‘এক মুরগিকে ক’বার কাটবেন?’’ শেষমেশ সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি আর মেলায় যাননি।
কৃষিমেলা কমিটির অন্যতম সদস্য, তথা বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস উপপ্রধান যদুরাম ঘোষের অভিযোগ, ‘‘শুভরঞ্জন রায় জবরদস্তি করে গত ১২ জানুয়ারি বিবেক উৎসব
ও পরের দু’দিন ছাত্র-যুব উৎসবকেও তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচিতে পরিণত করেছিলেন।’’ সে কথা উড়িয়ে দিয়ে শুভরঞ্জনের দাবি, ‘‘আমরা সরকারি দল। প্রথমে কথা হওয়া সত্ত্বেও জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতিকে দিয়ে মেলা উদ্বোধন না করিয়ে সাংসদকে দিয়ে উদ্বোধন করানোর প্রতিবাদ করেছিলাম। তখন ব্লক কৃষিকর্তা দ্বিতীয় দিনের মেলার দায়িত্ব আমাদের দেন।’’ মানসবাবু এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।