Ranaghat

মৃত মেয়ের জন্য প্রথম তর্পণ, জ্ঞান হারালেন বাবা

রানাঘাট শহরের চিল্ড্রেন্স পার্কের পাশে আবাসন তারা থাকতেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল অনুষ্কা। ৪ মে নিজেদের আবাসনের ছাদ থেকে নীচে পড়ে যায় সে।

Advertisement

সৌমিত্র সিকদার

রানাঘাট শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৩১
Share:

অনুষ্কা। ফাইল চিত্র

পুজোর আগে কত আব্দার করত মেয়েটা। নতুন স্টাইলের কোন জামা, কোন শাড়ি উঠেছে। পুজোর বাজারে তার কেনা চাই। গলা জড়িয়ে বাবার কাছে জানতে চাইত, কবে সবাই মিলে পুজোর কেনাকাটা করতে যাবে।

Advertisement

যে হাতে একমাত্র মেয়ের হাত ধরে পুজোর জামা কিনতে নিয়ে গিয়েছেন, ঠাকুর দেখতে গিয়েছেন, সেই হাতেই জল নিয়ে মহালয়ার সকালে মেয়ের নামে প্রথম বার তর্পণ করতে গিয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়লেন বাবা বিশ্বনাথ ঘোষ। তাঁর প্রাণ, তাঁর আদরের একমাত্র মেয়ে অনুষ্কার মৃত্যু হয়েছে চলতি বছর ৪ মে-র রাতে। বড় অস্বাভাবিক ও আকস্মিক সেই চলে যাওয়া। সেই ধাক্কা এ জীবনে আর কাটবে না বাবা-মায়ের।

রানাঘাট শহরের চিল্ড্রেন্স পার্কের পাশে আবাসন তারা থাকতেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল অনুষ্কা। ৪ মে নিজেদের আবাসনের ছাদ থেকে নীচে পড়ে যায় সে। প্রাথমিক ভাবে একে আত্মহত্যা মনে করা হচ্ছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হলে দেখা যায়, স্টার পেয়েছে অনুষ্কা।

Advertisement

রবিবার সকালে রানাঘাট শহরের পশ্চিমপাড়ে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের অবকাশ পার্কের পাশে চুর্ণী নদীর ঘাটে সেই মেয়ের নামে প্রথম বার তর্পণ করতে গিয়েছিলেন তার বাবা। সেই সময় তিনি জ্ঞান হারান। কয়েক জন আত্মীয় সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা কোনও ভাবে তাঁকে সুস্থ করে তোলেন। অনুষ্কার ছোট মেসো গৌতম হালদারও এ দিন তার জন্য তর্পণ করেছেন।

বিশ্বনাথ ঘোষ কাঁদতে-কাঁদতে বলেন, ‘‘আমাদের সব শেষ। পুজোর সময় মেয়েকে নিয়ে কত আনন্দ করতাম। সেই জায়গায় ওর নামে আমাকে তর্পণ করতে হচ্ছে। আমার চরম শত্রুর জীবনেও যেনএই দিন না আসে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন