শুরু হয়েছে চিকিৎসা। —নিজস্ব চিত্র
কয়লা বোঝাই মালগাড়িটি ঢোকার পরে নিয়মমাফিক তল্লাশি শুরু করেছিলেন সিআইএসএফের জওয়ানেরা। ফরাক্কার এনটিপিসি-র চত্বরে এটাই দস্তুর। তাই রবিবার ভোরে মালগাড়িটি ঢুকতেই নিজেদের কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন জওয়ানেরা। কুয়াশামাখা আলো-আধাঁরিতে আচমকাই শিশুর কান্না। সেই কান্নার সূত্র ধরেই ওয়াগন বোঝাই কয়লার উপর থেকে তাঁরা উদ্ধার করলেন সদ্যোজাত এক কন্যাসন্তানকে। ফরাক্কার কেন্দুয়া এলাকায় ওই ঘটনার পরে শিশুটি এখন এনটিপিসি-র নবারুণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পরে এসটিপিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই কন্যাসন্তানের যাবতীয় দায়িত্ব তাঁরা নেবেন। এনটিপিসি-র পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা অরবিন্দ কুমার সিনহা বলেন, ‘‘সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত ওই কন্যাসন্তানের সমস্ত দায়িত্ব আমাদের। সিআইএসএফ জওয়ানদের ভূমিকাও প্রশংসনীয়।’’
পুলিশ ও এনটিপিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে ঝাড়খণ্ডের লালমাটিয়া থেকে কয়লাবোঝাই মালগাড়িটি আসে। তারপরেই ওই কন্যাসন্তানটিকে উদ্ধার করেন জওয়ানেরা। চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটির বয়স বড়জোর একদিন। আপাতত সে সুস্থ এবং বিপন্মুক্ত। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসে পুলিশও।
পুলিশ জানিয়েছে, লালমাটিয়া থেকে ৮৫ কিলোমিটার পথ উজিয়ে প্রতিদিন এনটিপিসিতে চার থেকে পাঁচটি কয়লাবোঝাই মালগাড়ি আসে। গত পাঁচ বছরে ওই কয়লার ওয়াগন থেকে একাধিক মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। পাওয়া গিয়েছে শিশুর দেহও। ময়নাতদন্তের পরে জানা গিয়েছিল, তাদের বেশ কয়েক জনকে খুনও করা হয়েছিল।
এ ক্ষেত্রে পুলিশের অনুমান, কয়লাবোঝাই মালগাড়িটি ঝাড়খণ্ড থেকে রওনা দিয়েছিল রাতে। বেশ কিছু জায়গায় মালগাড়িটি দাঁড়িয়েওছিল। সেই সুযোগেই কেউ শিশুটিকে কাপড়ে জড়িয়ে ওয়াগনে রেখে পালিয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা খোলা আকাশের নীচে পড়ে থেকে বাচ্চাটি খানিক অসুস্থ হয়ে পড়ে। সময় মতো উদ্ধার করে চিকিৎসা শুরু হওয়ায় বিপদ এড়ানো গিয়েছে।