শোকস্তব্ধ শেহেনাজের পরিবারের লোকজন। নিজস্ব চিত্র
ছাত্রী খুনের কিনারা করতে রবিবার দিনভর পুলিশ ওই ছাত্রীর বন্ধু ও পরিচিতদের জেরা করল। সাগরদিঘি থানায় ডেকে এনে দফায় দফায় জেরা করা হয় শুক্রবার ধুলিয়ানে পরীক্ষা দিতে যাওয়া তার সহপাঠীদেরও। তাদের মধ্যে চার জন ছাত্রও রয়েছে। ওসি সুব্রত ঘোষ নিজেই কয়েক ঘণ্টা ধরে তাদের জেরা করেন। এমনকি ওই ছাত্রীর মোবাইল পরীক্ষা করে কয়েক জনকে চিহ্নিতও করেছে পুলিশ। তাদেরও ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশের দাবি, তদন্তে সকলেই সহযোগিতা করছে। ফলে খুব শীঘ্র শেহনাজ সুলতানা খুনের কিনারা সম্ভব হবে।
শুক্রবার রাতে সাগরদিঘির সাহেবনগর গ্রামে বাড়ির শৌচাগারের পাশে শ্বাসনালি কাটা অবস্থায় রক্তাক্ত দেহ মেলে জঙ্গিপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী শেহনাজ সুলতানার। মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে, জানলা দিয়ে ঢিল ছুড়ে ওই তরুণীকে বাড়ির বাইরে ডেকে এনে পরিকল্পিত ভাবেই এই খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। ওই রাতেই শেহনাজের বাবা এরফান আলি শেখের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ৩০২/৩৪ ধারায় খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীর খুব পরিচিত কেউ এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। তার নাগাল পেতে পুলিশ ওই তরুণীর মোবাইলের কল-লিস্ট খতিয়ে দেখছে। পুলিশের দাবি, ছাত্রীর মোবাইলেই লুকিয়ে আছে খুনির পরিচয়। রবিবার সাগরদিঘির সাহেবনগরের গ্রাম জুড়েই ছিল শোক ও আতঙ্কের পরিবেশ। শেহনাজের সঙ্গী ও বন্ধুদের থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করায় অনেকেই ঝামেলা এড়াতে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। সাহেবনগরেই বাড়ি সুতির একটি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সামসুদ্দিন শেখের। ছুটির দিনে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি বলছেন, “এই এলাকায় এমন ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি। স্বাভাবিক ভাবেই ঘটনার পরে সকলেই একটু ভয়ে ভয়ে আছে। আমরা চাই, অবিলম্বে পুলিশ এই খুনের ঘটনার কিনারা করুক।”
এ দিন মৃতার বাড়িতেও ছিল শোকের পরিবেশ। বার বার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ৮৭ বছরের বৃদ্ধা ঠাকুমা সাদেনুর বেওয়া। তিনি বলছেন, “শেহনাজের খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করুক পুলিশ।’’