সাজা ঘোষণা ১১ মে

অ্যাসিড ছুড়ে দোষী সাব্যস্ত

অ্যাসিড ছুড়ে এক কিশোরীকে খুনের ঘটনায় ইমান আলি শেখ নামে এক যুবককে দোষী সাব্যস্ত করলেন কৃষ্ণনগর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা (দ্বিতীয়) বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৭ ০১:৪৩
Share:

অ্যাসিড ছুড়ে এক কিশোরীকে খুনের ঘটনায় ইমান আলি শেখ নামে এক যুবককে দোষী সাব্যস্ত করলেন কৃষ্ণনগর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা (দ্বিতীয়) বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস। সরকার পক্ষের আইনজীবী নাসিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ওই যুবককে বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেছেন। ১১ মে তিনি সাজা ঘোষণা করবেন।”

Advertisement

নাসিরুদ্দিন জানান, মামলা প্রথমে রানাঘাট আদালতে চলছিল। কিন্তু নিহতের পরিবারের লোকজনকে নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে তাঁরা মামলাটি কৃষ্ণনগর আদালতে নিয়ে আসার জন্য আবেদন করেন। সেই মতো সরকার পক্ষের আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে মামলাটি কৃষ্ণনগর আদালতে নিয়ে আসা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ১০ অক্টোবর, নবমীর রাতে মায়ের পাশে শুয়েছিল হাঁসখালির গাজনা হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মৌ রজক (১৭)। সেই সময় দরজার ফাঁক দিয়ে তাকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছুড়ে মারলে পুড়ে যায় ওই ছাত্রী। দগ্ধ হন তার মা-ও। তাঁদের প্রথমে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৮ অক্টোবর মারা যায় মৌ।

Advertisement

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মোবাইলে মৌয়ের সঙ্গে আলাপ হয় এক যুবকের। মোবাইলের সূত্র ধরে দিন তিনেক পরে হাঁসখালির ছোটচুপরিয়ার বাসিন্দা ইমান আলি শেখকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, ফোনে আলাপ হওয়ার পরে তারা দীর্ঘ সময় ধরে ফোনে কথা বলতে শুরু করে। এক সময় ইমান মৌকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মৌ তাতে রাজি তো হয়ইনি, উল্টে ইমানকে অপমান করে।

সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতেই সে অ্যাসিড ছোড়ে বলে পুলিশের দাবি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, কৃষ্ণনগরের বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি ব্যাটারির দোকান থেকে সে অ্যাসিড সংগ্রহ করেছিল। পুলিশ সেই দোকানের মালিক নেপাল সাহাকেও গ্রেফতার করে। পরে বিচারক অবশ্য তাকে বেকসুর খালাস দেন। নিহত ছাত্রীর মা টুলু রজক বলেন, “দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আমরা খুশি। তবে আমরা চাই ওর চরমতম সাজা হোক।”

এই ঘটনার পরে অ্যাসিড বিক্রি ও মজুতের উপরে নজরদারি শুরু করে প্রশাসন। সেই মতো ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে লাইসেন্স দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয় জেলা প্রশাসন। শতাধিক ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে লাইসেন্স নিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। নজরদারির জন্য বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যা শুনে নিহত মৌ রজকের দাদা সঞ্জয় রজক বলেন, “সবই তো হল। প্রশাসন যদি সবটা আগে করত তাহলে আমার বোনটাকে এ ভাবে মরতে হত না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন